Logo Logo

গাজায় ত্রাণের জন্য অপেক্ষমাণ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত


Splash Image

গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকট আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো গুলিবর্ষণে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছেই।


বিজ্ঞাপন


সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গাজার মেডিক্যাল সূত্র আল জাজিরাকে জানিয়েছে, একদিনে অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সেইসঙ্গে হাসপাতালগুলোতে অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে আরও সাতজনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে।

গাজা সরকারের মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার উত্তর গাজায় জিকিম ক্রসিং পয়েন্টের দিকে যাওয়া ত্রাণ ট্রাকগুলোর কাছে গুলি চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ৫১ জন নিহত হন এবং আহত হন আরও অন্তত ৬৪৮ জন।

এদিকে, দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের নিকটে তথাকথিত মোরাগ করিডোরে ত্রাণ নিতে গিয়ে আরও ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল-সমর্থিত গ্লোবাল হিউম্যানিটেরিয়ান ফোরাম (GHF) গত মে মাসের শেষদিকে গাজায় ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করে। তবে শুরু থেকেই এসব ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থা। তাদের অভিযোগ, এসব এলাকায় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা না থাকায় সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ইতোমধ্যে এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি অপুষ্টিজনিত কারণে মারা গেছেন অন্তত ১৫৪ জন, যার মধ্যে ৮৯ জনই শিশু। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ‘ফুড মনিটরিং গ্রুপ’ জানিয়েছে, গাজায় দুর্ভিক্ষ শুরু হতে চলেছে বলে স্পষ্ট লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

একজন ফিলিস্তিনি মা, জিহান আল-কুরান, আল জাজিরাকে বলেন, “আমার মেয়ের পেটের দিকে তাকান। খাবার নেই, মাংস নেই—শুধু হাড়। রুটি ছাড়াই আমরা এক মাস পার করেছি।” তিনি জানান, জনতার ভিড়ে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। শেষে তিনি শুধু মেঝেতে পড়ে থাকা কিছু শুকনো পাস্তার খোসা খুঁজে পেয়েছেন।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজায় মানুষের মৌলিক মানবিক চাহিদা পূরণে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০০ থেকে ৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রয়োজন। অথচ গত চার দিনে মাত্র ২৬৯টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে এই অবরুদ্ধ উপত্যকায়। এতে পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।

বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি বারবার আহ্বান জানানো সত্ত্বেও গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পারছে না। এর ফলে অনাহার, অপুষ্টি, নিরাপত্তাহীনতা এবং সহিংসতার জাল থেকে মুক্তির কোনো আশার আলো দেখা যাচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...