 
                                ছবি : সংগৃহিত
বিজ্ঞাপন
আইন উপদেষ্টা বলেন, গণভোট আয়োজনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এই সিদ্ধান্ত কোনো ব্যক্তি বা নির্দিষ্ট পক্ষ নেবে না। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে এবং খুব দ্রুতই সিদ্ধান্ত হবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন।
আইন উপদেষ্টা জানান, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ তীব্র আকার ধারণ করেছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কাছে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোট আয়োজনের সুপারিশ করেছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের দিন গণভোট আয়োজন করা যেতে পারে। জামায়াতে ইসলামী জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করার দাবি জানালেও বিএনপি বলেছে, গণভোট নির্বাচনের দিনই হতে হবে। তিনি বলেন, ২৭০ দিন আলাপ-আলোচনার পরও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না হওয়া হতাশাজনক। তারা এখন সরকারকে নিজেদের দলীয় অবস্থান গ্রহণে চাপ দিচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থি। তিনি আরও বলেন, জুলাই সনদের চেতনা রক্ষায় দলগুলোর মধ্যে ঐক্য ছিল। কিন্তু মতভেদ এখন এমন পর্যায়ে গেছে যে, সমঝোতা দলিল পাস করাই সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জুলাই সনদের চেতনা দলগুলো নিজেরাই ক্ষুণ্ন করছে। এতদিন আলোচনার পরও যদি ঐকমত্য না আসে, তাহলে সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে রাজনৈতিক মতভেদ থাকলেও ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে সরকার অটল বলে জানান আইন উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ঐকমত্য কমিশনের দুটি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, একটি প্রস্তাব হলো জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি করে পরবর্তীতে গণভোট আয়োজন, আরেকটি হলো বিষয়টি নির্বাচিত সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়া। কোনটি কার্যকর ও বাস্তবসম্মত, তা নিয়ে আলোচনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আজ প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আইন নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়েছে। তিনি বলেন, আগের মানবাধিকার কমিশন বাস্তবে অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। এটা দন্তহীন একটা কমিশন ছিল। এবার সেটিকে সত্যিকারের ক্ষমতাসম্পন্ন ও জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়া হচ্ছে। নতুন অধ্যাদেশে কমিশনের কাঠামো, এখতিয়ার ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন কাঠামো অনুযায়ী কমিশন এখন থেকে রাষ্ট্রীয় সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করতে পারবে। গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও ভুক্তভোগী সুরক্ষাসহ মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক সব আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। ফলে আলাদা করে গুম কমিশন গঠনের প্রয়োজন হবে না। মানবাধিকার কমিশনের সিদ্ধান্ত ও সুপারিশ সরকারি সংস্থাগুলোকে মানতে হবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ আইন করা হয়েছে। মানবদেহে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন অধ্যাদেশ-২০২৫। এখানে প্রচলিত আইনে পরিবারের সদস্যরাই অঙ্গ দিতে পারতেন। এজন্য মানুষ দেশের বাইরে গিয়ে অন্য মানুষের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিতেন। নতুন আইনে যাদের সঙ্গে ইমোশনাল অ্যাটাচমেন্ট আছে, তারাও অঙ্গ দান করতে পারবেন। জুলাই গণ অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর অধ্যাদেশ অনুমোদিত হয়েছে। তিনি বলেন, সৌদি আরবে ৩৫-৪০ লাখ বাংলাদেশি কাজ করেন। তাদের অনেকে নানা দুরবস্থায় থাকেন। অনেক চেষ্টার পর সৌদি আরবের সঙ্গে একটা চুক্তি করতে পেরেছি। এতে চাকরি পরিবর্তন, বেতন না পাওয়া, দেশে ফিরে আসাসহ নানা কাজে তারা আইনি সহায়তা পাবেন।
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, স্থানীয় পরিকল্পনা অধ্যাদেশ-২০২৫ চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। জুলাই-আগস্ট ২০২৪-এ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুরুতর আহতদের বিদেশে চিকিৎসা ব্যয় প্রকল্প ও পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জানানো হয়েছে এখন পর্যন্ত ৬৫ জন বিদেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং একজনের পিছনে সর্বোচ্চ ৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। জাতীয় বননীতি ২০২৫ অনুমোদিত হয়েছে। জাতীয়ভাবে বৃক্ষ আচ্ছাদিত এলাকা এখন আছে ২৪ শতাংশ, সেটাকে এক দশকে নিয়ে যাওয়া হবে ২৭ শতাংশে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...