বিজ্ঞাপন
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) এই ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপারকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
ধর্ষণের অভিযোগে আসামি মাদ্রাসা সুপার ও শিক্ষিকা অভিযুক্ত শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান শিকদার (৫১) আয়েশা সিদ্দিকা মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসার সুপার ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম। তার বাড়ি বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বারাশিয়া গ্রামে; বাবার নাম আব্দুল হামিদ শিকদার। আরেক আসামি মাদ্রাসার শিক্ষিকা খাদিজা বেগম।
আহত সুপার বর্তমানে পুলিশ পাহারায় মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
মাদ্রাসা কক্ষে ধর্ষণের অভিযোগ মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ নভেম্বর বিকেলে মাদ্রাসা ছুটি হওয়ার পর সুপার শিক্ষার্থীকে তার কক্ষ ঝাড়ু দিতে ডেকে নেয়। একপর্যায়ে সুপার তাকে ধর্ষণ করেন। এ কাজে শিক্ষিকা খাদিজা বেগম সহযোগিতা করেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
ধর্ষণের পর ভুক্তভোগীকে ঘটনাটি কাউকে না জানাতে হুমকি দেওয়া হয়। ফলে শিক্ষার্থী বিষয়টি গোপন রাখে।
পরিবারকে জানানো ও আত্মহত্যা ৮ দিন পর বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে মেয়েটি তার মা–বাবাকে ঘটনাটি জানায়। তবে সে শর্ত দেয়—ঘটনা কারও কাছে প্রকাশ করা যাবে না, জানালে সে আত্মহত্যা করবে।
পরিবারের অন্য সদস্যরা বিষয়টি জানতে পারলে অপমান ও মানসিক চাপ সইতে না পেরে সেদিনই দুপুরে বসতঘরের আড়ায় ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দেয় ১৪ বছর বয়সী মাদ্রাসাছাত্রী রুপা আক্তার (পঞ্চম জামাত)।
ঘটনা জানাজানি হলে গ্রামবাসীর ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। তারা সুপারকে ধরে গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
শিক্ষার্থীর মা বলেন,“মাদ্রাসা ছুটির পর আমার মেয়েকে রুম ঝাড়ু দিতে বলে। এরপর খাদিজা ম্যাডামের সহযোগিতায় তাকে ধর্ষণ করে। ৮ দিন পর সে আমাদের জানায়। অন্যরা জানায় ফেলায় অপমান সইতে না পেরে সে আত্মহত্যা করেছে। আমার বুকের ধন হারালাম।”তিনি ঘটনাটির সর্বোচ্চ শাস্তি—ধর্ষকের ফাঁসি দাবি করেন।
শিক্ষার্থীর দুলাভাই শাহাবুদ্দিন বলেন,“ধর্ষণের পর খাদিজা ম্যাডাম জীবননাশের হুমকি দেন। আরও বলেন, সুপার তাকে বিয়ে করবে। বুধবার পরিবারকে ফোন করে এ বিষয় নিয়ে কথা বলেন খাদিজা। আমার শ্যালিকা এটা জেনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। আত্মহত্যার অন্যতম কারণ এটিও।”
মুকসুদপুর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শীতল চন্দ্র পাল বলেন,“অভিযোগ পেয়েছি, মামলা প্রক্রিয়াধীন। মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।”
তিনি আরও জানান,“অভিযুক্ত সুপারকে আটক করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্ত শিক্ষিকাকেও ধরতে অভিযান চলছে।”
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...