বিজ্ঞাপন
মাদকদ্রব্য হাতের নাগালে পাওয়ায় তরুণ, কিশোর ও যুবসমাজ দিন দিন মরণনেশায় ডুবে যাচ্ছে, ধ্বংস হচ্ছে পরিবার, পারিবারিক অর্থনীতি ও সামাজিক ভারসাম্য।
স্থানীয়রা বলছেন, মাদকের বিস্তার রোধে প্রশাসনের কার্যকর তৎপরতা নেই বললেই চলে। উপজেলা পর্যায়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তা বা অভিযান-সংশ্লিষ্ট টিমের তৎপরতা সচরাচর দেখা যায় না। থানা পুলিশ মাঝে মধ্যে ছিটেফোঁটা অভিযান চালালেও তা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। ফলে মাদক ব্যবসায়ীরা পাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে এই অঞ্চলকে।
বিশেষত মাদক কিনতে অর্থের সংস্থান করতে গিয়ে অনেক তরুণ-যুবক চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এর ফলে পরিবারগুলো সামাজিকভাবে নিগৃহীত ও নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। পরিবারে অশান্তি চরমে উঠছে, ভেঙে যাচ্ছে সম্পর্কের বন্ধন।
মাদকের বিস্তার যে কী পরিমাণে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, তার মর্মান্তিক উদাহরণ পাওয়া গেছে গত ২৯ জুলাই, মঙ্গলবার। ওই দিন বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মাদকের টাকার জন্য পারিবারিক কলহে এক কিশোর তার পিতা-মাতার হাতে খুন হয়। এই ঘটনা শুধুমাত্র একটি পারিবারিক ট্র্যাজেডি নয়, বরং গোটা উপজেলায় মাদকের প্রভাব কতটা গভীর তা স্পষ্ট করে তুলেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংসের খাদের দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাবে। এখনই লাগাম না টানলে তরুণ সমাজ এই মরণনেশার থাবায় নিঃশেষ হয়ে যাবে।
স্থানীয় সমাজকর্মীরা বলছেন, শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান নয়, মাদকের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পারিবারিক সচেতনতা এবং সামাজিক কাউন্সেলিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। অনেক ক্ষেত্রেই অভিভাবকদের অসচেতনতা এবং সন্তানদের মানসিক বিকাশে দিকনির্দেশনার অভাব কিশোর-কিশোরীদের বিপথে ঠেলে দিচ্ছে। ফলে তৈরি হচ্ছে সামাজিক অবক্ষয়।
বাকেরগঞ্জে মাদকবিরোধী কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে, সমাজে অপরাধপ্রবণতা এবং পরিবারে ভাঙনের হার আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এখনই সময়, একযোগে প্রশাসনিক, সামাজিক ও পারিবারিক উদ্যোগ গ্রহণ করে মাদকের এই ভয়াল ছোবল থেকে বাকেরগঞ্জকে রক্ষা করার।
প্রতিবেদক - জাহিদুল ইসলাম, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...