বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালে যে সামান্য ডাক্তার ও নার্স কর্মরত আছেন তারাও নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত থাকেন না। ফলে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রোগীকে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ১৯৮৫ সালে ৩১ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে। পরে এটিকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয় এবং ২০২২ সাল থেকে প্রশাসনিক অনুমোদনও মেলে। কিন্তু ২০২৫ সালেও পূর্ণাঙ্গভাবে ৫০ শয্যার সেবা চালু করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এখনও ৩১ শয্যার জনবল দিয়েই কোনোমতে টিকে আছে হাসপাতালটি।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন বহির্বিভাগে ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এছাড়া গড়ে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ জন ভর্তি থাকেন। কিন্তু বেডের অভাবে অনেক রোগীকে মেঝেতে থাকতে হয়। নতুন ভিআইপি বেড থাকলেও সেটি কার্যকর হয়নি। আবার পুরুষ ও নারী ওয়ার্ড থাকলেও শিশুদের জন্য আলাদা কোনো ওয়ার্ড নেই।
রবিবার সকাল ১০টার দিকে সাংবাদিকরা সরেজমিনে গেলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে কর্মক্ষেত্রে পাওয়া যায়নি। এছাড়া মেডিক্যাল অফিসার, ডেন্টাল সার্জন এবং কনসালটেন্ট ডা. মো. মোসরেকুল ইসলাম মনিসহ একাধিক চিকিৎসককেও অনুপস্থিত দেখা যায়। পরে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কনসালটেন্ট ডা. মোসরেকুল ইসলাম মনি হাসপাতালে প্রবেশ করেন।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ— ডাক্তার ও নার্সরা সময়মতো পাওয়া যায় না। অনেক সময় রোগীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়। পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ থাকা সত্ত্বেও স্যালাইন ছাড়া অন্য কোনো ওষুধ দেওয়া হয় না। ফলে সাধারণ মানুষকে বাধ্য হয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যেতে হয়।
স্থানীয়দের ভাষায়, “বারহাট্টা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যদি সঠিকভাবে জনবল নিয়োগ ও ব্যবস্থাপনা হতো, তবে আমাদের আর ময়মনসিংহ ছুটতে হতো না।”
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তিনি নারী ও শিশু আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য নেত্রকোনা কোর্টে গিয়েছিলেন, তাই সময়মতো কর্মস্থলে উপস্থিত হতে পারেননি। অব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলার সিভিল সার্জন ডা. গোলাম মোস্তফা বলেন, “স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যারা দায়িত্বে অবহেলা করছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...