বিজ্ঞাপন
জানা যায়, গত ২৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) শারদীয় দুর্গাপূজার অবকাশকালীন সময়ে ফাঁকা ক্যাম্পাস থেকে তিনি এসব টাইলস সরিয়ে নেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের সামনে রাখা টাইলসগুলো তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কিংবা প্রশাসনকে না জানিয়ে তাদের অজ্ঞাতসারে সরিয়ে ফেলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছুটি কাটানোর উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাস ছাড়ার পরপরই ইউনুছ শরীফ ২৬ সেপ্টেম্বর বেলা আড়াইটায় এসব টাইলস সরিয়ে ফেলেন, যা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সিসি ক্যামেরা ফুটেজে ধরা পড়ে। এ সংক্রান্ত বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ ও ছবি ইতোমধ্যে প্রতিবেদকের হাতে পৌঁছেছে।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, বিভিন্ন স্যাম্পলের মোট ৫২০টি টাইলস ইউনুছ শরীফ তার দপ্তরের একজন কর্মকর্তার সহযোগিতায় সরিয়ে ফেলেন, যার বাজারমূল্য লক্ষাধিক টাকা।
ফাঁকা ক্যাম্পাসে অবকাশকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ইউনুছ শরীফের এমন কর্মকাণ্ড বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ইতিপূর্বে ইউনুছ শরীফের বিরুদ্ধে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগসাজশে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধকোটি (৫৩ লাখ ৫০ হাজার) টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল। নয়টি প্রকল্পের দরপত্র নিয়ে জালিয়াতি, প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে এসব অর্থ তিনি আত্মসাৎ করেন। সেসময় তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিনি আত্মসাৎকৃত অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরতও দেন।
সাম্প্রতিক সময়ে তার আবারও লক্ষাধিক টাকার এই টাইলস আত্মসাত নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বারবার এমন কর্মকাণ্ডের পরও প্রশাসনের সাথে সুসম্পর্কের খাতিরে তিনি স্বপদে বহাল আছেন।
শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) পদবীর জন্য তিনি দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপ দিয়ে আসছেন। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪৫১ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প চলমান। প্রকল্প পরিচালক হিসেবে বর্তমানে মো. ওবায়দুল হক দায়িত্বে আছেন। কিন্তু তাকে তার পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সময়ে ইউনুছ শরীফ কয়েক বছর ধরে হুমকি দিয়ে আসছেন বলে জানা যায়। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক ওবায়দুল হক জানান, “দীর্ঘদিন ধরেই ইউনুছ শরীফ আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। এমনকি সে নিজেও আমাকে পদ থেকে সরে যাওয়ার জন্য গালমন্দ করেছে। স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে সে আমাকে ভয়ভীতি দেখায়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর আমি এ বিষয়ে বারবার অভিযোগ দিয়েছি।”
টাইলস আত্মসাতের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খান বলেন, “উপাচার্য মহোদয় কিংবা কর্তৃপক্ষের অজ্ঞাতসারে টাইলস নেয়া হয়েছিল। আমাকে টাইলস উদ্ধারের জন্য উপাচার্য মহোদয় নির্দেশ প্রদান করেন। আমি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। টাইলসের সংখ্যা ও গন্তব্য সম্পর্কে তাদের বক্তব্যে গরমিল পাই। অদ্যাবধি টাইলস কর্তৃপক্ষকে ফেরত কিংবা বুঝিয়ে দেয়া হয়নি।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইঞ্জি. মো. ইউনুছ শরীফের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি মুঠোফোন রিসিভ করেননি।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...