বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যেই ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সময় স্বল্পতা, বিপুল ব্যয় ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ব্যাপক লোকবলের প্রয়োজনীয়তার কারণে নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন করা অযৌক্তিক এবং অবাস্তব।”
তিনি আরও বলেন, “যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ভিন্নমত বা ‘নোট অব ডিসেন্ট’সহ ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোর উল্লেখ না রেখে এবং আলোচনায় না আসা বিষয় অন্তর্ভুক্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ প্রকাশ করা হয়েছে। এ ধরনের একপেশে পদক্ষেপ জাতিকে ঐক্যের বদলে বিভক্ত করবে, যা দীর্ঘ মেয়াদে জাতির জন্য অকল্যাণ ডেকে আনতে পারে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সংবিধান সংস্কার পরিষদ ২৭০ দিনের মধ্যে সংস্কার সম্পন্ন করতে না পারলে গণভোটে অনুমোদিত বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হবে—এমন প্রস্তাব সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও গণতান্ত্রিক রীতির পরিপন্থী। সংসদীয় পদ্ধতিতে কোনো বিল রাষ্ট্রপতির অনুমোদন ছাড়া আইনে পরিণত হতে পারে না।”
বিকল্প-২ প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি বলেন, “এ প্রস্তাবে সংবিধান সংস্কার সম্পর্কিত বিষয় সরাসরি গণভোটে তোলার কথা বলা হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রদত্ত মতামত ও ভিন্নমতের কোনো প্রতিফলন সেখানে নেই। অর্থাৎ কমিশনের সুপারিশ একতরফাভাবে জাতির ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, “দফাসমূহের বিপরীতে স্বাক্ষরিত জুলাই জাতীয় সনদে বিভিন্ন দলের মতামত, ভিন্নমত ও নোট অব ডিসেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এটি প্রমাণ করে যে, দীর্ঘ এক বছরব্যাপী সংস্কার কমিশন ও ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ ছিল অর্থহীন, সময় ও অর্থের অপচয় এবং জাতির সঙ্গে প্রহসন।”
তিনি বলেন, “গণতন্ত্রে ভিন্নমত থাকা স্বাভাবিক, তাই সংলাপের প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। কিন্তু ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর গণতান্ত্রিক অধিকারকে অগ্রাহ্য করেছে।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সংস্কারের বিএনপির ৩১ দফা, ২৭ দফা ও ভিশন-২০৩০–এর মাধ্যমে আমরা রাষ্ট্র কাঠামোর গণতান্ত্রিক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছি। জনগণের ম্যান্ডেট পেলে আমরা সেসব সংস্কার কার্যকর করব।”
তিনি আরও বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সকল অনুষ্ঠান বিটিভিসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়েছে। কিন্তু ১৭ অক্টোবর দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষরের সময় চূড়ান্ত কপি আমাদের দেখানো হয়নি। পরে হাতে পাওয়া প্রিন্টেড কপিতে দেখা যায়, আমাদের অগোচরে কিছু দফায় সংশোধন আনা হয়েছে।”
তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, “শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরকারি-বেসরকারি দপ্তরে টাঙানো সংক্রান্ত বিধান বিলুপ্তির বিষয়ে প্রায় সব রাজনৈতিক দল একমত হলেও তা সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। একইভাবে সংবিধানের ১৫০(২) অনুচ্ছেদের তফসিলগুলো বিলুপ্তির বিষয়ে ঐকমত্য থাকলেও তা চূড়ান্ত কপিতে পরিবর্তন করা হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান এবং মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...