বিজ্ঞাপন
পাথরঘাটায় রয়েছে হরিণঘাটা, নীলিমা পয়েন্ট ও বিহঙ্গ দ্বীপসহ বেশ কয়েকটি সম্ভাবনাময় পর্যটন স্পট। কিন্তু এখনো গড়ে ওঠেনি পর্যাপ্ত পর্যটন ব্যবসা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ। এলাকাবাসীর আশা—রুহিতা বিচকে কেন্দ্র করে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন আসবে। প্রকৃতির অকৃত্রিম সৌন্দর্য, মানুষের আন্তরিকতা ও ইতিবাচক ভাবমূর্তি দক্ষিণ উপকূলের সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটার মতো দেশব্যাপী ও বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।
রুহিতা বিচ থেকে সুন্দরবন নিকটতম ভ্রমণযোগ্য স্থান হওয়ায় এটি পর্যটকদের জন্য বিশেষ আকর্ষণ। এখানে বিষখালী নদীর মোহনীয় সৌন্দর্য, বিকেলের মনোমুগ্ধকর সূর্যাস্ত, সাদা বকের সারি, বাতাসে দুলতে থাকা ঘাসফুল—সব মিলিয়ে পর্যটকদের জন্য একটি অনন্য অভিজ্ঞতা তৈরি করে।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান বলেন, “পাথরঘাটা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভাণ্ডার। রুহিতা বিচ দিন দিন মানুষের আগ্রহের কেন্দ্র হয়ে উঠছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পরিচ্ছন্নতা রক্ষা ও পর্যটনবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রশাসন প্রয়োজনীয় সব সহযোগিতা করবে। যাতায়াত উন্নয়ন, আলোকসজ্জা, বসার ব্যবস্থা, বিহঙ্গ দ্বীপের সাথে সংযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নসহ নানা কার্যক্রম ইতিমধ্যে হাতে নেওয়া হয়েছে, যা খুব শিগগিরই বাস্তবায়িত হবে।”
তিনি আরও বলেন, “রুহিতা বিচ দেখে বিদেশি পর্যটকরা ভীষণ মুগ্ধ হয়েছেন। তারা বলেছেন—এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, শান্ত পরিবেশ, স্থানীয় মানুষের আতিথেয়তা এবং সুন্দরবনের নিকটতা এটিকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলতে পারে।”
পাথরঘাটা উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক অনুসন্ধানী সাংবাদিক ও গবেষক শফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, “পাথরঘাটা উপকূলীয় হওয়ায় পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এখানে একই স্থানে দেখা যায় সবুজ বন, বন্যপ্রাণী, হরিণ, কাশফুলের রাজ্য, সাদা বকের সারি এবং সমুদ্রের তাজা মাছ আহরণের দৃশ্য। এত সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সরকারের তেমন উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেই। পর্যটন উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোক্তা প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন, “পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে হলে পাথরঘাটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষা, নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং উদ্যোক্তা তৈরির মাধ্যমে এ খাত সমৃদ্ধ করা সম্ভব।”
স্থানীয়রা জানান, রুহিতা বিচসহ পাথরঘাটার পর্যটনকেন্দ্রগুলো দ্রুত উন্নয়ন হলে কর্মসংস্থান বাড়বে এবং স্থানীয় অর্থনীতি আরও চাঙা হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিবাচক উপস্থাপনা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।
এখানেই মিলবে একসাথে তিন অভিজ্ঞতা— সুন্দরবন ভ্রমণের সুযোগ, বিহঙ্গ দ্বীপের নান্দনিক দৃশ্য ও বিষখালী নদীর টাটকা মাছের স্বাদ।
এ ছাড়া সন্ধ্যায় রঙিন আলো-ছায়ায় সূর্যাস্ত দর্শন পর্যটকদের বিমোহিত করে। এলাকাবাসী ও প্রশাসনের সমন্বয়ে পর্যটকদের জন্য রয়েছে শতভাগ নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
পর্যটন ব্যবসায় জড়িতরা জানান, মাত্র ৯ হাজার টাকায় ১০ জনের সুন্দরবন প্যাকেজ ট্যুর করা যায়—যেখানে নাস্তা, খাবারসহ সকল সুবিধা অন্তর্ভুক্ত থাকে। এ সফরে দেখা মিলতে পারে হরিণ, বানরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর খুনসুটি।
এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, “রুহিতা বিচ থেকেই শুরু হোক পাথরঘাটার পর্যটন শিল্পের নতুন অধ্যায়। নেতিবাচক কিছু নয়—পাথরঘাটার স্বার্থে সবাই ইতিবাচকভাবে সৌন্দর্য তুলে ধরুক। দেশ-বিদেশে পরিচিত হোক আমাদের সম্ভাবনাময় রুহিতা বিচ।”
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...