বিজ্ঞাপন
বুধবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে ঝালকাঠি শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড়ের একটি পার্টি সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে তার নাম ঘোষণা করেন জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট খান হাফিজুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির এবিএম আমিনুল ইসলাম, জেলা অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আবদুর হাই, সদর উপজেলা আমির মাওলানা মনিরুল ইসলাম তালুকদারসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
মনোনয়নের ঘোষণা দিতে গিয়ে জেলা জামায়াতের আমির খান হাফিজুর রহমান বলেন, ড. ফয়জুল হক একজন পরিশীলিত, নীতিবান ও সাহসী মানুষ। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নামার ঘোষণার সময়ও দল তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল। দলীয় মূল্যায়নে প্রমাণিত হয়েছে, এ অঞ্চলের মানুষের কাছে তিনি জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য। সেই বিবেচনায় তাকে পূর্ণ মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ড. ফয়জুল হকের নেতৃত্বে এই আসনে ন্যায়ের রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত হবে।
মনোনয়ন পাওয়ার পর ড. ফয়জুল হক বলেন, দাঁড়িপাল্লার প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাওয়া তার জন্য গর্ব ও আনন্দের। তার ভাষায়, জামায়াতে ইসলামী ও দাঁড়িপাল্লার নেতৃত্বে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক সরকারের ভিত্তি গড়ে উঠবে, আর সেই পথচলার অংশ হতে পেরে তিনি সম্মানিত বোধ করছেন।
তিনি জানান, ঝালকাঠি-১ আসনকে উন্নয়ন, সুশাসন ও সত্য-ন্যায়ের রাজনীতির মডেল হিসেবে গড়ে তোলাই হবে তার প্রধান লক্ষ্য। তার ঘোষিত অঙ্গীকারগুলোর মধ্যে রয়েছে— দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিমুক্ত প্রশাসন নিশ্চিত করা; যুবসমাজের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি; রাজাপুর-কাঁঠালিয়া অঞ্চলের নদীভাঙন রোধ; যোগাযোগব্যবস্থার আধুনিকায়ন; রোগী পরিবহনে জরুরি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু; কৃষকদের সরাসরি বাজারসংযোগ নিশ্চিত করা এবং স্কুল-কলেজে মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
ড. ফয়জুল হক বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায় এবং তিনি সেই পরিবর্তনেরই বার্তাবাহক হতে চান। একই সঙ্গে তিনি সকল দলমতের মানুষকে সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়ে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ পতনের পর তার দেওয়া মানসিক সাহস ও দিকনির্দেশনায় নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি চরমোনাই, ছারছিনা, নেছারাবাদসহ দেশের বিভিন্ন পীর-মাশায়েখ, আলেম-ওলামা, সাংবাদিক, কবি-সাহিত্যিক, কৃষক-শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এর আগে গত ৪ আগস্ট ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি বিএনপির মালয়েশিয়া শাখার সহ-সমাজকল্যাণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে সময় তিনি জানান, বিএনপির সাম্প্রতিক অবস্থান ইসলামপন্থিদের প্রতি নেতিবাচক হওয়ায় তিনি রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পড়েন এবং দীর্ঘদিনের সম্পৃক্ততার পর দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
ড. ফয়জুল হক ওলিয়ে কামেল হযরত কায়েদ সাহেব হুজুর (রহ.)-এর নাতি। তিনি ১৯৮৭ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পশ্চিম চাড়াখালী গ্রামে একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে বিএ ও এমএ সম্পন্ন করার পর মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে ২০১৯ সালে পিএইচডি এবং ২০২৩ সালে পোস্ট-ডক্টোরাল ফেলোশিপ অর্জন করেন।
তিনি বিশিষ্ট আলেম মাওলানা মুজ্জাম্মিলুল হক রাজাপুরী হুজুরের সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। তার বড় ভাই অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ছাইফুল হক, মেজ ভাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ শহীদুল হক এবং সেজ ভাই আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আমিনুল হক।
গত ১৬ বছর ধরে অনলাইন টকশো, লেখালেখি ও মাঠপর্যায়ে অন্যায়, জুলুম ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রেখে আসছেন ড. ফয়জুল হক। প্রবাসে থেকেও ‘জুলাই বিপ্লব’-এর সময় জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে তিনি জাতীয় পর্যায়ে আলোচনায় উঠে আসেন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...