বিজ্ঞাপন
উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৮,৯৯০ মেট্রিক টন, যার মধ্যে ইতোমধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ সুপারি সংগ্রহ সম্পন্ন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আরও বেশি উৎপাদন হওয়া সম্ভব বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
২০০৭ সালের সিডরের পর দীর্ঘ সময় সুপারির উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। মাটি ও পানির লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় শত শত সুপারি বাগান মালিক মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন। যাদের বেশিরভাগই সুপারি বিক্রি করেই সংসার চালাতেন। তবে এ বছর বৃষ্টিপাত বেশি হওয়া এবং লবণাক্ততা কম থাকায় ফলন নাটকীয়ভাবে বেড়েছে। এতে কৃষক ও তাদের পরিবারে ফের আনন্দ ফিরেছে।
জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে বাগেরহাট সদর উপজেলায়—মোট ১,২০০ হেক্টর জমিতে। কচুয়ায় রয়েছে ১,১৫৩ হেক্টর, মোরেলগঞ্জে ৭৫০ হেক্টর, শরণখোলা ৩০০, ফকিরহাট ২৫০, চিতলমারী ১২০, রামপাল ১২২, মোল্লাহাট ৬০ এবং মংলায় ৩ হেক্টর জমিতে সুপারি চাষ হয়েছে। গত বছর জেলায় সুপারি উৎপাদন হয়েছিল ২৬,৮০০ মেট্রিক টন। এ বছর উৎপাদন আরও বাড়বে বলেই মত কৃষি বিভাগের।
এবার সুপারির বাজারে বড়সড় চাহিদা রয়েছে। বাগেরহাট দরগাহ, কচুয়া বাজার, যাত্রাপুর, গজালিয়া, বাধাল ও ফকিরহাটের বিভিন্ন হাটে এক কুড়ি (২৩১–২৬৪ পিস) সুপারি ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম আরও বাড়বে বলে আশা করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
কচুয়ার সুপারি ব্যবসায়ী নারায়ন বাওলী বলেন, “শেষ সময়ের দিকে দাম আরও চড়া হবে। এ বছর গুণগত মান ভালো হওয়ায় বাজারে চাহিদাও বেশি।”
জেলার বিভিন্ন হাট থেকে সুপারি বাছাই করে ঢাকার পাশাপাশি ভৈরব, চট্টগ্রাম, রংপুর, দিনাজপুর, ফেনি ও অন্যান্য অঞ্চলে ট্রাকযোগে সরবরাহ করা হচ্ছে। বাগেরহাটের সুপারি স্বাদ ও মানে উন্নত হওয়ায় দেশজুড়ে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
সুপারি চাষে সময় ও ধৈর্য দুটিই গুরুত্বপূর্ণ। চারা রোপণের প্রায় পাঁচ বছর পর ফল ধরা শুরু হয় এবং ধারাবাহিক পরিচর্যা করলে দীর্ঘসময় ফল পাওয়া যায়। সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়টিই সুপারি সংগ্রহ ও বেচাকেনার প্রধান মৌসুম।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, “উন্নত জাতের সুপারি চাষ এখন কৃষকদের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে। কয়েক বছর আগে লবণাক্ততা ও খরার কারণে উৎপাদন কমে গিয়েছিল। এখন পরিবেশ অনুকূল থাকায় ফলন বাড়ছে। কৃষকেরা ভালো দাম পেলে সুপারি হবে বাগেরহাটের অন্যতম লাভজনক অর্থকরী ফসল।”
এ বছর রেকর্ড ফলনের সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় বাগেরহাটে সুপারি চাষ আরও বিস্তৃত হবে বলে আশা করছেন কৃষক, ব্যবসায়ী এবং কৃষি বিভাগ।
প্রতিবেদক- মো: রাকিব হাসান, বাগেরহাট।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...