ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (১৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদযাত্রা ঘিরে শুধু সড়কেই নয়, রেল ও নৌ-পথেও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ঈদ কেন্দ্রিক ১৫ দিনে রেলপথে ২৫টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ১২ জন আহত হন। অন্যদিকে, নৌপথে ১১টি দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত এবং ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
সবমিলিয়ে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে মোট ৪১৫টি দুর্ঘটনায় ৪২৭ জন নিহত এবং ১১৯৪ জন আহত হয়েছেন বলে সমিতির পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “সড়কে দুর্ঘটনা ও যাতায়াতের ভোগান্তি কমিয়ে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক করতে হলে ঈদের আগে কমপক্ষে ৪ দিনের সরকারি ছুটি থাকা জরুরি। তাড়াহুড়া ও যানজটের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। এই সমস্যা সমাধানে ঈদ যাত্রাবিষয়ক একটি দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় পরিকল্পনা দরকার।”
তিনি আরও বলেন, “গণপরিবহন ও এর ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা বাড়াতে হবে। ছোট যানবাহনগুলোকে মহাসড়ক থেকে উচ্ছেদ করতে হবে। প্রশিক্ষিত চালক নিয়োগ, ফিটনেসবিহীন যানবাহন বাতিল এবং মানসম্মত সড়ক নিশ্চিত করার পাশাপাশি সড়ক আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে।”
সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ঈদের সময় ভারী বর্ষণের কারণে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়। এসব গর্তে পড়ে অনেক যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, ঈদের পরে অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটে চালকদের বিশ্রামহীন ও বিরামহীনভাবে গাড়ি চালানোর ফলে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দুর্ঘটনা হয়েছে খাদে পড়ে যাওয়ার কারণে কিংবা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাক বা অন্য যানবাহনের পেছনে ধাক্কা লাগার কারণে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এবারের ঈদেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ছিল চরমে। অনেক যাত্রীকে বাসের ছাদ, ট্রেনের ছাদ, খোলা ট্রাক বা পণ্যবাহী গাড়িতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়েছে। বিশেষ করে নিম্নআয়ের মানুষদের এই দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বেশি। পথে পথে যাত্রী হয়রানি এবং নিরাপত্তার অভাব ছিল প্রকট।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি মনে করে, এসব অনিয়ম ও ঝুঁকি কমাতে হলে একটি কেন্দ্রীয় তদারকি ও রুটিনভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন, যাতে প্রতিটি উৎসবেই সাধারণ মানুষের যাত্রা নিরাপদ ও স্বস্তিদায়ক হয়।