ভোরের বাণী
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। ফাইল ছবি
বিজ্ঞাপন
বহুল আলোচিত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের নয় মাস পর দেশ ছেড়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫ মিনিটে থাই এয়ারওয়েজের টিজি ৩৪০ নম্বর ফ্লাইটে তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। গন্তব্য ব্যাংকক। পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি) ইমিগ্রেশন, এইসএসআইএ শিফট-১-এর বিশেষ পুলিশ সুপার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তার সঙ্গে ছিলেন ছেলে রিয়াদ আহমেদ এবং শ্যালক ডা. নওশাদ খান। ইমিগ্রেশন বিভাগ সূত্র জানায়, আবদুল হামিদ চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ত্যাগ করেছেন। প্রয়োজনীয় ভিসা, ট্রাভেল ডকুমেন্টস এবং পরিচয়পত্র যাচাই করে তাদের যাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, দেশের চিকিৎসকদের পরামর্শেই তিনি বিদেশে চিকিৎসা নিতে গেছেন। কয়েক মাস ধরেই তার শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগজনিত জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শুধুই চিকিৎসা নয়—সাম্প্রতিক কিছু ঘটনার প্রেক্ষিতে সাবেক রাষ্ট্রপতির এ দেশত্যাগ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলার তথ্যও উঠে এসেছে।
২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জ সদর থানায় তার নামে মামলা দায়ের হয়। অভিযোগপত্রে তাকে প্রধান অভিযুক্ত করা হয়। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এবং সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নামও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় দলটির শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দায়ের হয়। তবে শুরুতে আবদুল হামিদের নাম কোনো মামলায় আসেনি। এই প্রথমবার তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক মামলা হলো, যার পরপরই তিনি দেশ ছাড়লেন।
বিশ্লেষকদের মতে, এটি নিছক একটি চিকিৎসা সফর নয়, বরং সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার সম্ভাব্য পরিণতির একটি কৌশলী প্রতিক্রিয়া হতে পারে।