Logo Logo

কোটালীপাড়া থানার উদ্যোগে নির্মিত হচ্ছে ‘থানা মার্কেট’


Splash Image

বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রশাসনিক বিভ্রান্তির মধ্যেই গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া থানায় এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন থানা পুলিশ কর্তৃপক্ষ।


বিজ্ঞাপন


পুলিশি কর্মকাণ্ড যখন নানা প্রশ্নবিদ্ধতা থেকে মুক্তির চেষ্টায়, তখনই গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের দিকনির্দেশনায় ওসি আবুল কালাম আজাদের উদ্যোগে থানার পরিত্যক্ত ও দখলমুক্ত জায়গায় নির্মিত হচ্ছে ১৭টি দোকান নিয়ে একটি মার্কেট—যা এখন স্থানীয়দের কাছে পরিচিত ‘থানা মার্কেট’ নামে।

থানা ভবনের পেছনের কিছু অংশ, পুকুরপাড় এবং বাউন্ডারি ওয়ালের পাশের জায়গা দখলমুক্ত করে সেখানে দোকান নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। আগে এই জায়গাগুলো আংশিকভাবে ফুটপাতের দোকানদারদের দখলে ছিল। তবে কোটালীপাড়ার সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনুর আক্তারের তৎপরতায় এসব দোকান সরিয়ে পৌর কিচেন মার্কেটে স্থানান্তর করা হয়। এরপর ওসি আবুল কালাম আজাদ থানার পরিত্যক্ত জায়গাগুলো পুনর্ব্যবহারের উদ্যোগ নেন।

ওসি আজাদ জানান, “যখন দেখলাম যে জায়গাগুলো পরিত্যক্ত ও জনসাধারণের উপকারে ব্যবহারযোগ্য, তখনই পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনি প্রক্রিয়ায় দোকান নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিই। কোনো অনিয়মের সুযোগ এখানে নেই।”

জানা গেছে, প্রতিটি দোকান ১০০ বর্গফুট আয়তনের এবং মাসিক ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার টাকা। পাঁচ বছর মেয়াদি চুক্তিতে প্রতিটি দোকান বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ৬ লাখ টাকা অগ্রিমের ভিত্তিতে। ইতিমধ্যে নির্মাণকাজের দুই-তৃতীয়াংশ শেষ হয়েছে।

এই উদ্যোগ রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। কোটালীপাড়া পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান হাওলাদার বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের সময় থানার কোনো কর্মকর্তা বা স্থানীয় নেতা এ ধরনের জনবান্ধব উদ্যোগ নেয়নি। অথচ আওয়ামী লীগের পতনের পর এই সরকারবিহীন সময়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তার হাত ধরে আমরা একটি থানা মার্কেট পাচ্ছি—এটি অবশ্যই প্রশংসনীয়।”

একইসঙ্গে কোটালীপাড়া উপজেলা জামায়াতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মাসুদুর রহমান বলেন, “পূর্বের শাসনামলে কোটালীপাড়ার অনেক সরকারি জায়গা ক্ষমতাসীন দলের দখলে ছিল। এখন থানার মতো একটি জায়গায় বাজার গড়ে তোলা এবং শ্রেষ্ঠ ওসি হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া আমাদের জন্য গর্বের।”

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এই মার্কেট ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বড় সুযোগ তৈরি করেছে। নতুন দোকানপাট গড়ে উঠলে বাজার এলাকা আরও সুশৃঙ্খল ও জনবান্ধব হবে বলে মনে করছেন তারা।

পুলিশের এই উদ্যোগ প্রমাণ করে যে, সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও সদিচ্ছা থাকলে রাষ্ট্রীয় সম্পদ জনস্বার্থে কাজে লাগানো সম্ভব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ছাড়াও সামাজিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পুলিশের অংশগ্রহণ জনগণের আস্থার জায়গা তৈরি করছে—এমন মতই উঠে আসছে নানা মহল থেকে।

প্রতিবেদক - মাহাবুব সুলতান, কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...