Logo Logo
দূনীতি

দুদকের ৩ মামলার আসামি হয়েও বহাল তবিয়তে পিআইও


Splash Image

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ৩টি মামলার আসামি হয়েও বহাল তবিয়তে রয়েছেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. আবুল কালাম আজাদ।


বিজ্ঞাপন


তার বিরুদ্ধে উঠেছে কোটি টাকার দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে অবস্থান করার অভিযোগ। তাকে ঘিরে প্রশাসনের ভেতরেও দেখা দিয়েছে চরম অস্বস্তি ও বিব্রতকর পরিস্থিতি।

সূত্র জানায়, অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৪ কোটি ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে পিআইও আবুল কালামের বিরুদ্ধে দুদক মোট ৩টি মামলা দায়ের করেছে। তারপরও তার দাপট কমেনি; তিনি এখনও কর্মস্থলে স্বাভাবিকভাবেই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, আবুল কালাম আজাদ তার স্ত্রী, সন্তান ও আত্মীয়স্বজনের নামে নামে-বেনামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তার মালিকানাধীন রয়েছে প্রায় অর্ধকোটি টাকা মূল্যের একটি প্রিমিও গাড়ি, যা দিয়ে তিনি প্রতিদিন পাবনা থেকে শাহজাদপুরে যাতায়াত করেন।

২০১৯ সালে শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই তিনি তৎকালীন সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন। অভিযোগ রয়েছে, তার কার্যালয়টি অল্প সময়েই দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়। যদিও ২০২১ সালে তাকে বদলি করা হয়, তথাপি রাজনৈতিক সুবিধাভোগীদের সহযোগিতায় তিনি শাহজাদপুরেই থেকে যান। ২০২২ সালে সাময়িকভাবে বদলি হলেও ২০২৪ সালে পুনরায় শাহজাদপুরে ফিরে আসেন। তবে প্রশাসনিক পরিবর্তনের কারণে আগের মতো সুবিধা আদায় করা আর সম্ভব হয়নি।

পরবর্তীতে দুদকের পাবনা কার্যালয়ের তদন্তে তার স্ত্রী মর্জিনা খাতুন ও ছেলে ফজলে রাব্বীর নামে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ মেলে, যার কোন বৈধ আয়ের উৎস নেই বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় গত ১১ মার্চ দুদকের পাবনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাধন চন্দ্র সূত্রধর বাদী হয়ে পিআইও আবুল কালাম, তার স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করেন।

এই বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন,

“পিআইও আবুল কালাম আজাদের কারণে আমি নিজেও বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছি। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা করছি, খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।”

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আবুল কালাম আজাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে তার কার্যালয়ে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

প্রসঙ্গত, একজন দুর্নীতির মামলার আসামি হয়েও দায়িত্ব পালন করে যাওয়া শুধুমাত্র প্রশাসনিক শৈথিল্য নয়, এটি দেশের আইনি কাঠামোর প্রতিও প্রশ্ন তুলছে বলে মন্তব্য করছেন সচেতন নাগরিকেরা।

-তাহছিন নূরী খোকন, শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

আরও পড়ুন

বরিশালে ট্রাক উল্টে দুই বেদে নারীর মৃত্যু, আহত ১০
বরিশালে ট্রাক উল্টে দুই বেদে নারীর মৃত্যু, আহত ১০
মিথ্যা মামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধে নতুন বিধান আনছে সরকার
মিথ্যা মামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধে নতুন বিধান আনছে সরকার