Logo Logo
আইন-আদালত

মিথ্যা মামলা ও গণগ্রেপ্তার বন্ধে নতুন বিধান আনছে সরকার


Splash Image

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। ছবি : সংগৃহীত


বিজ্ঞাপন


রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, সমাজে মিথ্যা মামলা ও গণগ্রেপ্তারের যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে, তা কমাতে সরকার নতুন কিছু বিধান প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (BIISS) ও জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধসংক্রান্ত কার্যালয় (UNODC)–এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসিফ নজরুল বলেন, “মিথ্যা মামলা এবং এসব মামলায় গ্রেপ্তার সমাজের সব স্তরে উদ্বেগ তৈরি করেছে। নির্দোষ মানুষকে আসামি করা হচ্ছে।”

তিনি জানান, ব্যক্তিগতভাবে তিনি প্রায়ই প্রশ্নের মুখোমুখি হন—কেন মিথ্যা মামলা থামাতে পারছেন না। এর জবাবে তিনি সমাজের সব মহল থেকে পরামর্শ চেয়ে আসছেন কীভাবে এই সংকট নিরসন সম্ভব।

আইন উপদেষ্টা জানান, এসব মামলা ও গ্রেপ্তার বন্ধে কিছু নতুন বিধান তৈরি করা হয়েছে। তবে তা এখনই প্রকাশ করা হচ্ছে না। তিনি আশাবাদী, এসব ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে মিথ্যা মামলার প্রবণতা হ্রাস পাবে।

আসিফ নজরুল আরও জানান, পূর্বের সময়ের রাজনৈতিক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারে সরকার ইতোমধ্যে শক্ত পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রায় ১২ হাজার মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে প্রায় তিন লাখ মানুষকে জড়ানো হয়েছিল।

আন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তার বড় অংশই পুলিশ ও বিচার বিভাগের ওপর কেন্দ্রীভূত। আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমরা তিনটি অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেছি: অভিযুক্তদের স্বচ্ছ বিচার নিশ্চিত করা, মামলার অচলাবস্থার কারণ চিহ্নিত করা এবং বিচার বিভাগের জবাবদিহি নিশ্চিত করা।”

এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধনের জন্য চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে, যা আগামী রোববার অথবা উপদেষ্টা পরিষদের পরবর্তী বৈঠকে অনুমোদন পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

আসিফ নজরুল বলেন, “আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় আইনজীবীর উপস্থিতি নিশ্চিত করার একটি প্রস্তাব সংস্কার কমিশন থেকে এসেছে। তবে এ নিয়ে কিছু অংশীদারের মধ্যে শক্ত আপত্তি রয়েছে, ফলে আপাতত এটি আইনে যুক্ত হচ্ছে না।”

আইন উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে সংশোধনী এনেছে এবং এসব মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রক্রিয়াগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, “ছেলেশিশুদের যৌন নির্যাতনকে আমরা প্রথমবারের মতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছি।”

এছাড়া, গুমবিষয়ক আন্তর্জাতিক কনভেনশনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি নতুন আইন প্রণয়নের কাজও চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সেমিনারের দ্বিতীয় অধিবেশনে অংশ নিয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন বলেন, “বিনা বিচারে আটক কমাতে হলে পুলিশ ও বিচার বিভাগ—উভয়েরই দায়িত্বশীল ভূমিকা জরুরি। একে অন্যের ওপর দায় চাপিয়ে লাভ নেই। সবাই মিলে কাজ করলেই এ সংকটের সমাধান সম্ভব।”

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন UNODC-এর উপ আঞ্চলিক প্রতিনিধি সুরুচি পান্ট। দ্বিতীয় অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সদস্য ও আইনজীবী তানিম হোসাইন শাওন। বক্তব্য দেন UNODC-এর টিম লিডার অ্যানা জিডিস।

আরও পড়ুন

আঞ্চলিক সড়ক দুই লেন ও ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রীজ গার্ডার ব্রীজে রূপান্তর করার দাবী
আঞ্চলিক সড়ক দুই লেন ও ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি ব্রীজ গার্ডার ব্রীজে রূপান্তর করার দাবী
জেলেকে পিটিয়ে হত্যা, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার ভাই
জেলেকে পিটিয়ে হত্যা, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার ভাই