বিজ্ঞাপন
পাশাপাশি বিদ্যালয়টিতে সরেজমিনে গিয়ে উপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা খতিয়ে দেখেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. রিয়াজ।
এর আগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ‘তিন ক্লাসে পাঁচ শিক্ষক, ছয় শিক্ষার্থী দিয়ে চলছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ এবং ‘ল্যাপটপ প্রধান শিক্ষকের বাসায়, ব্যবহার ব্যক্তিগত কাজে’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয়ের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী আছে মাত্র ছয়জন, অথচ সেখানে কর্মরত আছেন পাঁচজন শিক্ষক। এছাড়া বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ প্রধান শিক্ষক বাসায় নিয়ে গিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ উঠে।
সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৭ জুলাই প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানমকে শোকজ নোটিশ দেয় রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। তাকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়। একইসঙ্গে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. রিয়াজকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তে গিয়ে তিনি প্রধান শিক্ষকের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা যাচাই করেন।
শোকজের জবাবে প্রধান শিক্ষক সাহিদা খানম জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিদ্যালয়ে কাগজপত্রে শিক্ষার্থী ছিল ৫১ জন, তবে বিভিন্ন কারণে এখন তা কমে ৩৫ জনে দাঁড়িয়েছে। তিনি দাবি করেন, সাংবাদিকরা যেদিন বিদ্যালয়ে যান সেদিন উপস্থিত ছিলেন ২৫ জন শিক্ষার্থী, যার মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে ১৯ জন এবং তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ৬ জন শিক্ষার্থী ছিলেন। এছাড়া বৃষ্টির কারণে বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ বাসায় রেখে যেতে হয়েছিল বলে জানান তিনি।
তবে তদন্ত প্রতিবেদনে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মো. রিয়াজ উল্লেখ করেছেন, ওই দিন প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে ১২ জন, প্রথম শ্রেণিতে ৬ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৪ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ২ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ১ জন এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ১ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। অর্থাৎ, সর্বমোট ২৬ জন শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে।
এদিকে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিদ্যালয়ে কাগজে-কলমে শিক্ষার্থী বেশি দেখানো হলেও বাস্তবে প্রতিদিন ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত থাকে। তদন্তের খবরে শিক্ষার্থী এনে উপস্থিতি দেখানো হয়েছে বলেও অভিযোগ তাদের। তারা আরও জানান, বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু নেই, শিক্ষকরা সময়মতো আসেন না এবং শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে অনেক সময় আগে চলে যান।
এ বিষয়ে রাজাপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকতার হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষকের শোকজের জবাব ও তদন্ত প্রতিবেদন ঝালকাঠি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয়েছে। জেলা শিক্ষা অফিস থেকে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝালকাঠি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জাহিদুল কবির তুহিন বলেন, ‘রাজাপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার তদন্ত প্রতিবেদন ও শোকজ নোটিশের জবাব পাঠিয়েছেন। এখন বিষয়টি আইনানুগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
-মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি