বিজ্ঞাপন
এই ঘটনায় গুরুতর আহত হন জামায়াত কর্মী নাসির উদ্দিন চৌধুরী। বর্তমানে তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাত ৯টার দিকে পাথরঘাটা পৌর শহরের ইমান আলী সড়কের উত্তর মাথায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান।
ছাত্রশিবিরের পাথরঘাটা পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পাথরঘাটা পৌরসভার সামনে ছাত্রদল নেতা অমিত হাসান শুভ’র অনুসারীরা ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে উত্ত্যক্ত করার মিথ্যা অভিযোগ এনে তর্কে জড়ান। বিষয়টি প্রমাণের আহ্বান জানালে তারা জানান, "বড় ভাই শুভ এসে সমাধান করবেন।"
পরে অমিত হাসান শুভ সেখানে উপস্থিত হলে উভয় পক্ষের মধ্যে পুনরায় বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের থানায় নিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর ছাত্রদলের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী মোটরসাইকেলে করে দেশীয় অস্ত্রসহ মহড়া শুরু করেন। পরে পাথরঘাটা পৌর জামায়াতের আমির মাওলানা মো. বজলুর রহমানের ফার্মেসিতে হামলা এবং জামায়াত কর্মী নাসির উদ্দিন চৌধুরীর ওপর কুপিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ ওঠে।
গুরুতর আহত নাসির উদ্দিন চৌধুরীকে অচেতন অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অবস্থার অবনতি হলে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
নাসির উদ্দিন পাথরঘাটা পৌর শহরের শাহাবুদ্দিনের ছেলে এবং ছাত্রশিবির নেতা মিজানুর রহমানের বাবা।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা ও সাবেক দপ্তর সম্পাদক অমিত হাসান শুভ দাবি করেছেন, "তাকে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। বরং রাতেই তার ওপর হামলা হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই এমন ঘটনা ঘটছে।"
পাথরঘাটা উপজেলা জামায়াতের আমির হাফেজ মাওলানা মাসুদুল আলম বলেন, “জামায়াতের পৌর আমির ও এক কর্মীর ওপর সন্ত্রাসীরা নির্মমভাবে হামলা চালিয়েছে। নাসির উদ্দিন এখন মৃত্যুশয্যায়। আমরা এ ঘটনায় থানায় মামলা করেছি এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
অন্যদিকে, পাথরঘাটা পৌর বিএনপির সদস্য সচিব ইসমাইল শিকদার জানান, “ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে থানায় সালিশ হচ্ছিল। জামায়াত কর্মীকে কে বা কারা কুপিয়েছে, সে বিষয়ে আমাদের জানা নেই।”
ঘটনার পর শহরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে অতিরিক্ত পুলিশ ও নৌবাহিনী মোতায়েন করা হয়। ওসি মেহেদী হাসান বলেন, “মারামারির ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। শহরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।”
হামলার প্রতিবাদে ও আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় পাথরঘাটা উপজেলা জামায়াতের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবেদক - ইব্রাহীম খলীল, পাথরঘাটা, বরগুনা।