ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় র্যাব এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। র্যাব জানিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে পারিবারিক বিষয় জড়িত। তদন্তে জানা গেছে, এক ইমন নামের ব্যক্তি তার পরকীয়া প্রেমিকাকে নিয়ে কাঠমান্ডু যাচ্ছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে তার মা এবং স্ত্রী যাত্রা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে এক পর্যায়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিমানবন্দরে বোমা আতঙ্ক সৃষ্টি করেন।
শনিবার (১২ জুলাই) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) একেএম শহিদুর রহমান।
র্যাব ডিজি বলেন, “গতকাল ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে বোমা রয়েছে—এমন একটি ফোন কল আসে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে। এতে যাত্রা স্থগিত করা হয় এবং বিমানটি তিন থেকে চার ঘণ্টা নিবিড় তল্লাশির মধ্যে পড়ে। শেষ পর্যন্ত কিছুই পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে এয়ারলাইন্সের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, ঘটনার পরপরই র্যাব ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় তদন্ত শুরু করা হয় এবং রাতভর অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তে জানা যায়, ইমন নামের ওই ব্যক্তি তার প্রেমিকাকে নিয়ে নেপাল যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বিষয়টি তার স্ত্রী ও মা জানতে পারেন। তারা ইমনের যাত্রা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে পরামর্শ নেন ইমনের এক বন্ধু ইমরানের কাছ থেকে। ইমরান পরামর্শ দেন বিমানবন্দরে বোমা থাকার গুজব ছড়ানোর, যাতে যাত্রা স্থগিত হয়। পরে ইমনের মা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে ফোন করে বিমানে বোমা থাকার কথা জানান।
র্যাব ডিজি বলেন, “এটি একটি গর্হিত ও দুঃখজনক কাজ। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। যারা এই ধরনের অপরাধ করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, ১১ জুলাই বিকেলে ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুগামী বিজি-৩৭৩ ফ্লাইটটি ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। উড়োজাহাজটি তখন ১৪২ যাত্রী ও ৭ জন ক্রু নিয়ে ট্যাক্সি করছিল। ঠিক সেই সময় একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে, যেখানে বলা হয় ফ্লাইটটিতে বোমা রয়েছে।
তৎক্ষণাৎ বিমান বাহিনীর টাস্ক ফোর্স ও এভসেক বিমানটির চারপাশে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল এবং এপিবিএনের ডগ স্কোয়াড। পরে র্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী ইউনিটও তল্লাশিতে যোগ দেয়। উড়োজাহাজের অভ্যন্তর ও লাগেজ পরীক্ষা করে দেখা হয়। যাত্রীদের নিরাপদে নামিয়ে এনে স্ক্রিনিং শেষে লাউঞ্জে পাঠানো হয়।
রাত ৭টা ৫৮ মিনিটে তল্লাশি শেষ হয় এবং নিশ্চিত করা হয় যে, বিমানে কোনো বিস্ফোরক বা সন্দেহজনক বস্তু পাওয়া যায়নি।