বিজ্ঞাপন
সরকার ২০১৮ সাল থেকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ শুরু করে। দুই বছর আগে সুবিধাভোগীদের মাঝে এসব ঘর হস্তান্তর করা হয়। তবে বাস্তবতা হলো—অনেক ঘরেই তালা বন্ধ অবস্থায় পড়ে আছে, এবং প্রকৃত ভূমিহীনরা এখনও ঘরের আশায় বসে আছেন।
তাড়াশ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে মোট ৩৫৬টি আশ্রয়ণ ঘর রয়েছে। এর মধ্যে দেশিগ্রাম ইউনিয়নের বড়মাঝদক্ষিণা মৌজায় ৪৮টি, শ্যামপুর মৌজায় ৩৫টি, তালম ইউনিয়নের গুল্টা মৌজায় খ্রিস্টান মিশনারিপাড়ায় ১৩টি ও গুল্টা কলেজপাড়ায় ৬টি ঘর রয়েছে। বাকি ঘরগুলো বিভিন্ন ইউনিয়নে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ ঘরেই তালা ঝুলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, যাদের ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকেরই নিজস্ব বাড়ি রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, প্রকৃত ভূমিহীনদের বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতি, রাজনৈতিক প্রভাব ও আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে অনেককে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এদিকে ভূমিহীনরা জানান, ঘর পাওয়ার জন্য একাধিকবার মৌখিক ও লিখিত আবেদন করলেও তারা উপেক্ষিত থেকে গেছেন।
বড়মাঝদক্ষিণা গ্রামের ভূমিহীন মোকবেল হোসেন বলেন, “আমার নিজের কোনো ঘর নেই, সন্তানদের নিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছি। বহুবার আবেদন করেও ঘর পাইনি।”
অন্যদিকে, যাদের ঘর বরাদ্দ হয়েছে তারাও অনেকেই সেখানে থাকছেন না। স্থানীয়রা জানান, এসব ঘরের মালিকরা পার্শ্ববর্তী কারো কাছে দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে নিজের বাড়িতেই থাকছেন। অনুপস্থিত মালিকদের হয়ে কেউ কেউ হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল পালন করছেন ফাঁকা ঘরগুলোতে।
দেশিগ্রাম ইউনিয়নের কাটাগাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আজাদুল ও জাহিদুল জানান, তারা ঘর পেয়েছেন, কিন্তু এখনও কোনো দলিল বুঝে পাননি।
আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর থাকা সত্ত্বেও সেখানে বসবাস না করার বিষয়ে জানতে চাইলে হেলাল উদ্দিন সরকার বলেন, “আমার হাঁস-মুরগি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে রাখি, মাঝে মধ্যে যাই।”
এ বিষয়ে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বলেন, “ভূমিহীন কেউ অভিযোগ করলে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। আর যাদের বাড়ি থাকার পরও তারা আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পেয়েছেন এবং তাতে বসবাস করছেন না—তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিবেদক-মোঃ ফরহাদ হোসেন, তাড়াশ