Logo Logo

ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়

ইবি শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু, তদন্তে পৃথক দুই কমিটি


Splash Image

ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্র সাজিদ আব্দুল্লাহর মৃত্যুকে রহস্যজনক বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও হল প্রশাসন পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি করেছে।


বিজ্ঞাপন


শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে ইবি কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেনকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। আগামী ১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে রিপোর্ট পেশ করার জন্য অফিস আদেশে অনুরোধ করা হয়েছে।

অফিস আদেশে বলা হয়েছে- গত ১৭ জুলাই (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যা ৬টার দিকে শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুর থেকে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ'র ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে সঠিক ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রদানের জন্য ইবি উপাচার্য একটি ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করেছেন।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- শাহ আজিজুর রহমান হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এ টি এম মিজানুর রহমান, লালন শাহ হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. গাজী মো. আরিফুজ্জামান খান, আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. খাইরুল ইসলাম।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, ' চিঠি হাতে পেয়েছি। আগামীকাল থেকেই আমাদের কার্যক্রম শুরু করবো। এই মৃত্যুর পর যেহেতু ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি জড়িত রয়েছে তাই বিষয়টি নিয়ে খুব গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করা হবে। নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো বলে আশা রাখছি।'

এদিকে হল প্রশাসন মৃত্যুর বিষয়টি যথাযথ তদন্ত করে প্রতিবেদন প্রদানের লক্ষ্যে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে। এতে হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজীকে আহ্বায়ক, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. আব্দুল বারীকে সদস্য ও হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আ.হ.ম নুরুল ইসলামকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. গফুর গাজী বলেন, ‘আমরা আগামীকাল (১৯ জুলাই) সকাল ১০টায় সভা ডেকেছি। যতদ্রুত সম্ভব আমরা রিপোর্ট প্রদান করবো।’

এদিকে, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মসজিদে সাজিদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তার সহপাঠীরা লাশবাহী ফ্রিজিং ভ্যান আটকিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন লিখিত মুচলেকা দিলে ভ্যান ছেড়ে দেওয়া হয়।

সাজিদের বাবা আহসান হাবিবুল্লাহ কুষ্টিয়ায় ছেলের জানাজা শেষে বলেন, ‘আমার ছেলের মৃত্যু রহস্যজনক। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’

সাজিদের পরিচিতরা জানান, 'সাজিদ সাঁতার জানতো। সাঁতার জানলে কেউ কীভাবে পুকুরে ডুবে মারা যায়? আমরা চাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সত্য ঘটনা উঠে আসুক।

সুরতহাল প্রতিবেদনের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক হোসেন ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে তার শরীরে অপমৃত্যুর কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। তবে ভিসেরা রিপোর্ট আসার পর আমরা নিশ্চিত বলতে পারব।’

প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাজিদের পোস্টমর্টেম হয়ে গেছে। সবকিছুর প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর আমরা প্রকৃত ঘটনা জানতে পারব।’

প্রসঙ্গত, ইবির শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুর থেকে এক শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সাড়ে ৬টার দিকে ইবি থানা পুলিশের উপস্থিতিতে মরদেহ তোলা হয়। পরে রাত ৮টায় কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ড. সুতাপ রায় মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে বিকাল সোয়া ৫টার দিকে সাজিদের মরদেহ পুকুরে ভাসতে দেখেন শিক্ষার্থীরা।

মৃত সাজিদের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল উপজেলায়। তার বাবা একটি মাদরাসার সুপারেনডেন্ট আহসান হাবিবুল্লাহ দেলোওয়ার। সাজিদ জিয়াউর রহমান হলের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। সাজির চার ভাইবোনের পরিবারে একমাত্র ভাই।

-ইদুল হাসান,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...