ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া।
বিজ্ঞাপন
ট্রাকের ওপর নির্মিত ওই মঞ্চটি শনিবার (১৯ জুলাই) বিকেল পৌনে চারটার দিকে ভাঙচুর করা হয়। ঘটনার পরপরই সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বিকেল পাঁচটার দিকে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেওয়ার কথা থাকলেও, এর আগেই হামলার ঘটনা ঘটে। এনসিপির দাবি, ছাত্রদল ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা মঞ্চে হামলা চালিয়ে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন এবং ট্রাকের কাচ ভাঙচুর করেন।
এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ইমন সৈয়দ বলেন, “চকরিয়ায় আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু বিএনপির নেতা-কর্মীরা মঞ্চ ভাঙচুর করেছে। এ কারণে অনুষ্ঠান বাতিল করতে হয়েছে। বর্তমানে আমরা লামা-থানচি সড়কের ফাসিয়াখালী এলাকায় অবস্থান করছি। আমাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতারাও রয়েছেন। এখানে বিএনপির লোকজনের একটি জটলা রয়েছে, আমরা আতঙ্কে আছি।”
চকরিয়া উপজেলা সংগঠক খাইরুল বাশার বলেন, “ছাত্রদল ও বিএনপির কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে আমাদের ট্রাক-মঞ্চটি ভাঙচুর করে। তারা ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে ও ট্রাকের কাচ ভাঙচুর করে সমাবেশস্থল দখল করে নেয় এবং নিজেদের স্লোগান দিতে থাকে।”
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ব্যবসায়ীরা জানান, দুপুর থেকে এনসিপির পক্ষ থেকে মঞ্চ তৈরি করে মাইকিং করা হচ্ছিল। বিকেল পৌনে চারটার দিকে হঠাৎ কিছু লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মঞ্চে হামলা চালায় এবং মাইকিংকর্মীদের তাড়িয়ে দেয়।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মঞ্চ ভাঙচুরের বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানি না।”
এদিকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দাবি করেছেন, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বক্তব্যে তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। শনিবার দুপুরে কক্সবাজার শহরে আয়োজিত এক সমাবেশে নাসীরুদ্দীন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদকে ইঙ্গিত করে বলেন, “আগে নারায়ণগঞ্জে বিখ্যাত গডফাদার শামীম ওসমান ছিল। এখন শুনছি কক্সবাজারের নব্য গডফাদার শিলং থেকে এসেছে। ঘের দখল করছে, মানুষের জায়গাজমি দখল করছে। চাঁদাবাজি দখল করছে। আবার নাকি সে সংস্কার বোঝে না... কক্সবাজারের জনতা এ ধরনের সংস্কারবিরোধী, যে পিআর বোঝে না রাজপথে তাঁদের দেখিয়ে দিবে ইনশা আল্লাহ।”
এই বক্তব্যকে “আপত্তিকর” আখ্যা দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভে নামেন। বিকেল চারটা থেকে চকরিয়ায় মহাসড়কে বিএনপির কর্মীদের মিছিল শুরু হয় এবং সালাহউদ্দিন আহমদের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন।
এনসিপির নেতারা বলছেন, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের ওপর হামলা গণতন্ত্রবিরোধী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার জেরে চকরিয়া ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা ও পুলিশের যৌথ টহল অব্যাহত রয়েছে।