Logo Logo

তিস্তার পানি বিপদসীমার উপরে, শত শত পরিবার পানিবন্দি


Splash Image

লালমনিরহাট জেলার তিস্তা নদীতে হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলের ফলে নদীর পানি হুহু করে বাড়ছে।


বিজ্ঞাপন


মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টায় তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে পানির প্রবাহ বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে রেকর্ড করা হয়েছে। এতে তিস্তা তীরবর্তী চর ও নিম্নাঞ্চলে প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানির সমতল ছিল ৫২.২০ মিটার, যেখানে বিপদসীমা ধরা হয়েছে ৫২.১৫ মিটার। অথচ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পানির স্তর ছিল বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচে। মাত্র কয়েক ঘণ্টায় পানি ২৩ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

পাউবোর লালমনিরহাট নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, “উজান থেকে পানি আসার পাশাপাশি সকালেও বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর ফলে নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করছে। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।”

তিস্তা তীরবর্তী সিন্দুর্না ও ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। চরাঞ্চলসহ নিম্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় কৃষিজমির আমন ধান ডুবে যাচ্ছে, ফলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আরিফুল ইসলাম বলেন, “এভাবে পানি বাড়তে থাকলে আমার ইউনিয়নের চরাঞ্চলের শত শত পরিবার পানিবন্দি হবে। ইতিমধ্যে অনেক আমন ধানের খেত ডুবে যাচ্ছে।”

একই আশঙ্কা প্রকাশ করেন ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান। তিনি জানান, “বন্যা হলেই কয়েকটি ওয়ার্ডের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। পানি বাড়ায় ইতোমধ্যে কিছু পরিবার বিপাকে পড়েছে।”

হাতীবান্ধা উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উত্তম কুমার নন্দী জানান, “বিকাল থেকেই পানি বাড়তে শুরু করে। এতে করে হাতীবান্ধা উপজেলার অন্তত এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে গেছে।”

এদিকে, উপজেলা প্রশাসন সতর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাতীবান্ধার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীম মিঞা। তিনি বলেন, “আমি সার্বক্ষণিক খবর রাখছি। আমার জানামতে অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সিংঙ্গীমারী ইউনিয়নে একটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা প্রস্তুত আছি।”

বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হলে তাৎক্ষণিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। স্থানীয়দের আতঙ্ক থাকলেও অনেকে নিজেদের উদ্যোগে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছেন।

সরকারি দপ্তরগুলো থেকে জানানো হয়েছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সব বিভাগ সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে এবং প্রয়োজনে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণে প্রস্তুত রয়েছে।

প্রতিবেদক - জিল্লুর রহমান, লালমনিরহাট।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...