বিজ্ঞাপন
গত ২৯ জুলাই (সোমবার) সন্ধ্যায় চন্দ্র দিঘলিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন রিয়াজুল সদ্দার (৩২)। ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে মারাত্মক জখম হন তিনি।
স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে রিয়াজুলকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে দায়িত্বরত অর্থোপেডিক সার্জন ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ সাদিকুল আমিন রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে জরুরি ভিত্তিতে তার পা কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন।
অপারেশনের পরও রিয়াজুলের শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটে। পরে চিকিৎসকরা রোগীকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। কিন্তু ঢাকায় নেওয়ার পথেই রিয়াজুলের মৃত্যু হয়।
রিয়াজুলের চাচাতো ভাই ঝন্টু সদ্দার বলেন, “রিয়াজুলের মৃত্যু সম্পূর্ণভাবে ডাক্তারদের গাফিলতির ফল। যথাসময়ে চিকিৎসা না পেয়ে এমন পরিস্থিতি হয়েছে। চিকিৎসকদের দেরি, অসংবেদনশীলতা ও সিদ্ধান্তহীনতাই তাকে শেষ করে দিয়েছে।”
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. মোঃ সাদিকুল আমিন বলেন, “রোগীর স্বজনেরা রক্ত সংগ্রহ করতে দেরি করেছেন, ফলে রোগীর অবস্থা দ্রুত খারাপ হয়ে যায় এবং ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।”
ঘটনার পর পুরো এলাকায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা দায়ী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ ও স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় সুশীল সমাজের একাধিক প্রতিনিধি বলেন, “একজন মানুষ সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে মারা যাবেন, এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবি করছি।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঘটনার বিষয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য দেননি। তবে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
রিয়াজুলের মৃত্যুতে তার পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একইসঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে—জেলা সদরের হাসপাতালেই যদি এ ধরনের অভিযোগ থাকে, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপদ চিকিৎসা কোথায়?
প্রতিবেদক - মামুনুর রহমান শিকদার জুয়েল, গোপালগঞ্জ।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...