Logo Logo

হাবিপ্রবিতে পরিবহন সংকট, ১৩ টির মধ্যে ৮ টি বাসই নষ্ট


Splash Image

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)-তে শিক্ষার্থীদের চলাচলের জন্য নির্ধারিত ১৩টি বাসের মধ্যে ৮টি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে।


বিজ্ঞাপন


ফলে ক্যাম্পাস থেকে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর যাতায়াতে ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্র ৫টি সচল বাস ও ২টি বিআরটিসি দ্বিতল বাস। এতে করে শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনের যাতায়াতে তৈরি হয়েছে তীব্র ভোগান্তি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সচল রয়েছে ১১, ১২, ১৭, ১৯ ও ২০ নম্বর বাস এবং দুটি বিআরটিসি বাস। অন্যদিকে ৮, ৯, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬, ১৮ ও ২১ নম্বর বাসগুলো দীর্ঘদিন ধরে নানারকম যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে অচল অবস্থায় রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ দিনাজপুর শহরের কলেজ মোড়, সুইহারী ও চৌরঙ্গী এলাকায় মেসে থাকেন। কেউ কেউ থাকেন নিজেদের বাসায়। এদের অধিকাংশই যাতায়াত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে। একইসাথে টিউশন বা অন্যান্য কাজে শহরে যাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়।

ক্যাম্পাসে বাসের সংখ্যাগত ঘাটতির কারণে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে বাসের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা ও তীব্র ভিড়ে সীট না পাওয়ার বিড়ম্বনায়। একাধিক শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, প্রতিদিন সীট নিশ্চিত করতে বাস ছাড়ার অন্তত ১৫-২০ মিনিট আগে গিয়ে দাঁড়াতে হয়। আবার ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় যে বাস আসে, সেটিই পুনরায় শহরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়— ফলে ওই বাসে জায়গা পাওয়া তো দূরের কথা, তাতে ওঠাই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

বিশেষ করে ছাত্রীদের ভোগান্তি আরও বেশি। ছাত্রীদের জন্য আগে নির্দিষ্ট কিছু ট্রিপে আলাদা বাস থাকলেও এখন সেই ব্যবস্থা নেই।

হাবিবা খাতুন নামের এক ছাত্রী বলেন, “বাসে সীট পাওয়া আমাদের জন্য অনেক কঠিন হয়ে গেছে। ধাক্কাধাক্কি করে ওঠা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে বাধ্য হয়েই কখনো অটোতে, কখনো হেঁটে যাতায়াত করছি।”

পরিবহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, “বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ৫টি বাস এবং ২টি বিআরটিসি বাস চলমান আছে। বাকি বাসগুলো ঠিক করতে আমরা কাজ করছি। কিছু বাসে হঠাৎ করে ত্রুটি দেখা দেয়। আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছি দ্রুত ১০টি বাস সচল করার। পাশাপাশি ছাত্রীদের জন্য আলাদা বাস চালুরও পরিকল্পনা আছে।”

তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পরিবহন খাতে বাজেট বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, “বাসগুলোর বেশিরভাগই ২৫ বছরের পুরনো। স্বাভাবিকভাবেই এগুলো সার্ভিস দিতে পারছে না। মেইনটেইন্যান্স খরচও বাড়ছে। পুরাতন গাড়িগুলো বাদ দিয়ে নতুন বাস কেনা জরুরি। পাশাপাশি গাড়ি রাখার জন্য শেড ও নিরাপত্তাবেষ্টনী না থাকায় পরিবহনগুলোর আয়ুষ্কালও কমে যাচ্ছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বাস রাখার কোনো নির্ধারিত ও সুরক্ষিত জায়গা না থাকাকেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে তুলে ধরেন। তার মতে, খোলা জায়গায় বৃষ্টিতে ভিজে ও রোদের তাপে বাসগুলো দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের যাতায়াত-সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে শীঘ্রই আরও বড় ভোগান্তিতে পড়বে শিক্ষার্থীরা— এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেকেই। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই বাস সংকটের কথা বলে আসা হচ্ছে, কিন্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধান মিলছে না।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...