অভিযুক্ত শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিন।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, শিক্ষক নাসির উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে ক্লাসে ও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, অশ্লীল ইঙ্গিত, কুপ্রস্তাব ও শারীরিক হেনস্তা করে আসছিলেন। এমনকি, অভিযোগে উল্লেখ আছে— তিনি নিজের মোবাইল ফোন থেকে আপত্তিকর ভিডিও দেখাতেন ক্লাস চলাকালীন সময়ে।
ছাত্রীদের ভাষ্যমতে, শিক্ষক নাসির উদ্দিন মাঝে মাঝেই ‘নুপুরের শব্দে শরীর শিহরিত হয়’, ‘বোরকা এলোমেলো থাকলে সব দেখে ফেলেছি’ এমন মন্তব্য করতেন। এছাড়াও, তিনি তার বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তাব এবং মোটরসাইকেলে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ইঙ্গিতপূর্ণ প্রস্তাব দেন একাধিক শিক্ষার্থীকে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, “আমি ক্লাসে কখনো কথার রসিকতা করে থাকি, হয়তো কোনো কথায় ভুল হতে পারে। তবে যদি অভিযোগে প্রমাণ থাকে, তা দেখানো হোক।”
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাহাঙ্গীর আকন জানান, “ছাত্রীদের অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে যাচাই করে দেখা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বক্তব্য এবং ছাত্রীদের অভিযোগের মধ্যে সামঞ্জস্য থাকায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
রাজাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ.কে.এম. হারুন-অর-রশীদ বলেন, “আমি নিজে বিদ্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করবো। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঝালকাঠি জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল জব্বার বলেন, “এ বিষয়ে এখনও কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলে নিয়মিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার পর বিদ্যালয়পাড়ায় উদ্বেগ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। অভিভাবক মহল শিক্ষক নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে বিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর নজরদারির আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
প্রতিবেদক - মো. নাঈম হাসান ঈমন, ঝালকাঠি।
জনপ্রিয়
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...