বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শেবাচিমের মেডিসিন বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ দুই ঘণ্টা পর মা-ছেলেকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হস্তান্তর করে। বর্তমানে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসাধীন।
ভুক্তভোগী সাব্বির সিকদার জানান, তার বড় বোন সিজারের পর ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ায় পুনরায় শেবাচিমে ভর্তি করাতে আসেন। একইসঙ্গে জ্বরে আক্রান্ত মাকেও হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সকাল ৮টার দিকে মেডিসিন বিভাগের ১১০ নম্বর রুমে এসে তিনি রোগীদের লাইনে দাঁড়ান। সকাল ১১টার দিকে মাত্র পাঁচজন বাকি থাকতে স্টাফরা জানান, মানববন্ধনের কারণে রোগী দেখা হবে না। এ বিষয়ে আগেই জানানো হয়নি বলে আপত্তি তুললে স্টাফদের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। পরে তিনি ফেসবুকে লাইভে গেলে ফোন ছিনিয়ে নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। মা ছাড়াতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। একপর্যায়ে মা-ছেলে এক ডাক্তারের রুমে আশ্রয় নিলেও সেখানেও তাদের প্রহার করা হয়।
সাব্বির অভিযোগ করেন, ডাক্তাররা কেউ তাদের রক্ষা করেননি। বরং হাসপাতাল প্রশাসন এসে উল্টো তাকে ডাক্তারকে মারধরের অভিযোগে শাসায়। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।
আমেনা বেগম বলেন, “ওরা সবাই মিলে আমার ছেলেকে মারছিল। আমি পা জড়িয়ে ধরে অনুরোধ করেছি, তবুও তারা থামেনি। এমনভাবে মেরেছে যে রক্ত বের হয়ে গেছে। আমি পা না জড়ালে হয়তো মেরে ফেলতো।”
হাসপাতালের এক সেবাগ্রহীতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “একজন ডাক্তার সব রোগীকে বের করে দিয়ে প্রতিটি রুমে তালা লাগিয়ে দেন। তিনি বলেন, কোনো রোগী দেখা হবে না। আমরা সাড়ে তিন হাজার স্টাফ, আজকে ওদের সঙ্গে বুঝে নেব।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. রাহাত হোসেন ফয়সাল জানান, খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল টিম পাঠিয়ে শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করা হয়। “আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি এবং ঘটনার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে,” বলেন তিনি।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম মশিউল মুনীর বলেন, “আমাদের মেডিসিন ওয়ার্ডে মেডিকেল স্টাফ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীসহ কিছু রোগীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা হয়েছে। আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি, যা বিষয়টি খতিয়ে দেখবে। দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি পুলিশি তদন্তও চলবে।”
তিনি আরও বলেন, “হাসপাতালের সেবা নির্বিঘ্ন রাখতে সবাইকে শান্ত থেকে কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করতে হবে।”
প্রতিবেদক - মোঃ আশিকুল ইসলাম, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...