Logo Logo

মায়ের সাথে ছেলের বয়সের পার্থক্য ৮ বছর, চাকরি করেন একই বিদ্যালয়ে


Splash Image

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ৬৫ নম্বর সূর্যমনি নেছারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একই সঙ্গে মা-ছেলের শিক্ষকতা ঘিরে জন্মতারিখ ও বয়স নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোসাম্মৎ পারভীন আক্তার এবং সহকারী শিক্ষক মো. হাবিবুর রহমান মা-ছেলে সম্পর্কিত। সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী তাদের জন্মতারিখের ব্যবধান মাত্র ৮ বছর ৫ মাস ১৬ দিন।

সরকারি নথি অনুসারে, পারভীন আক্তারের জন্ম তারিখ ১৫ জানুয়ারি ১৯৭১ এবং তার ছেলে হাবিবুর রহমানের জন্ম তারিখ ১ জুলাই ১৯৭৯। ফলে তাদের বয়সের পার্থক্য দাঁড়ায় মাত্র আট বছরের কিছু বেশি। পারভীন আক্তার চাকরিতে যোগ দেন ১৬ অক্টোবর ১৯৮৯ সালে এবং হাবিবুর রহমান যোগ দেন ১৩ এপ্রিল ২০০৬ সালে।

সূর্যমনি নেছারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পারভীন আক্তার যোগ দেন ৬ এপ্রিল ২০১৯ সালে (IPEMIS ID: 9150205030410) এবং হাবিবুর রহমান যোগ দেন ২১ জানুয়ারি ২০১৯ সালে (IPEMIS ID: 9150205020106)। বিষয়টি Integrated Primary Education Management Information System (IPEMIS) এবং বিদ্যালয়ের মাসিক কার্যবিবরণীর তথ্য থেকে নিশ্চিত হয়েছে।

সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, “আমার চাকরি হয়েছে আমার মায়ের আগে এবং আমি চাকরি করি আমার বয়সে। তার বাবা-মা তার বয়স কিভাবে লিখেছেন সেটা আমি জানি না। তবে জানি, আমার জন্মের পর তিনি পড়াশোনা করেছেন এবং এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। আমি তখন বাবার সঙ্গে স্কুলে যেতাম। বয়স নিয়ে কখনো খেয়াল করিনি।”

সহকারী শিক্ষিকা পারভীন আক্তার বলেন, “আমার ছেলে জন্মের পর আমি পড়াশোনা করেছি। তখন বিষয়টা খেয়াল করিনি, শিক্ষকরাও খেয়াল করেননি। আমি মেট্রিক, আইএ এবং বিয়ে পাশ করার সময় ভুলটা বুঝতে পারিনি। এখন আপনারা ধরিয়ে দিচ্ছেন।”

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মরিয়ম আক্তার ডলি জানান, “তারা ২০১৯ সালে আমার স্কুলে যোগ দিয়েছেন, তবে আমি ওই সময় দায়িত্বে ছিলাম না। ডিসেম্বর ২০১৯-এ আমি যোগদান করি। এর আগে তারা গুলিসাখালী ইউনিয়নে চাকরি করতেন। তখনকার শিক্ষকরা বিষয়টি জানেন। পরে অনেকের কাছ থেকে বয়স নিয়ে প্রশ্ন শুনেছি।”

উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ইউনুস আলী বলেন, “তাদের সরকারি নথিপত্র অনুযায়ীই চাকরি হয়েছে। আমি এখানে নতুন এসেছি, তাই মন্তব্য করতে পারছি না। তবে যদি বয়স নিয়ে অনিয়ম প্রমাণিত হয়, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।”

মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনসুর হেলাল বলেন, “এখনো এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এর আগে গত ১৭ আগস্ট স্থানীয় সূর্যমনি এলাকার পাঁচজন নারী-পুরুষের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে বলা হয়, শিক্ষক হাবিবুর রহমান দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট থেকে বিদ্যালয়ে নিয়মিত পাঠদান করছেন না। বরং শিক্ষার্থীদের মারধর, বিদ্যালয়ের কার্যক্রমে গাফিলতি ও নানা অনিয়মের অভিযোগও তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত হয়েছে। এ কারণে তার বদলি চেয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করা হয়।

এ নিয়ে গত ২২ ও ২৩ আগস্ট বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...