বিজ্ঞাপন
এ পরিস্থিতির প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে কবি নজরুল হলের অনার্স ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানায় কলেজ শাখা ছাত্রদলের একাংশ।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে হল সংস্কারের জন্য ১৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হলেও সেই অর্থ ব্যয় হয়েছে কলেজ অধ্যক্ষ আব্দুল হালিমের সরকারি বাসভবন সংস্কারে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, “আমরা প্রতিদিন জীবনঝুঁকি নিয়ে হলে থাকছি। ছাদ থেকে খসে পড়া টুকরো মাথায় পড়ছে। অথচ সরকার টাকা দিলেও আমাদের হল সংস্কার না করে অধ্যক্ষ সাহেব নিজের বাসভবন মেরামত করেছেন। এটা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা।”
মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহিম বলেন, “হলের অবস্থা এখন ভাঙা ঘরের মতো। আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সংস্কার কাজ শুরু না হলে আন্দোলনে নামব। প্রয়োজনে অধ্যক্ষের পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকব।”
ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এম মামুন রহমান অভিযোগ করে বলেন, “ছাত্ররা জরাজীর্ণ হলে থাকে আর অধ্যক্ষ সরকারি টাকায় নিজের বাসা মেরামত করেন—এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে সংস্কার শুরু করতে হবে, নইলে ছাত্ররা কঠোর আন্দোলনে যাবে।”
অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম বলেন, “হলের ২য় তলার একটি কক্ষে ছাদের কংক্রিট খসে পড়েছে, রড বেরিয়ে আছে। ৩য় তলার সব কক্ষে বৃষ্টির সময় পানি পড়ে, অনেক জায়গার রঙ উঠে গেছে। কলাম ও বিম ফেটে গেছে, দরজা-জানালা অনুপযোগী। পাশ দিয়ে ট্রেন চলার সময় ভবন কাঁপে। অর্থের সীমাবদ্ধতার কারণে পুরোপুরি সংস্কার সম্ভব হয়নি।”
তিনি আরও জানান, চলতি অর্থবছরে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে কলেজের অডিটোরিয়াম ও তার সরকারি বাসভবনসহ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ৬৮ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সেই অর্থ প্রকৌশলীদের মতামত নিয়ে ব্যয় করা হচ্ছে এবং প্রতিটি টাকার হিসাব তার কাছে রয়েছে।
ফরিদপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন বলেন, “আমাদের পরিদর্শনে দেখা গেছে, ভবনের ৩য় তলার ছাদ সম্পূর্ণ ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। নিচতলার ডাইনিং ও কিচেন রুমের ছাদও ভেঙে দিতে হবে। সব কলাম, ফুটিং ও বিম রেট্রোফিটিং করতে হবে। বৈদ্যুতিক সংযোগ প্রতিস্থাপন, দরজা-জানালা ও নিরাপত্তা গ্রিল নতুন করে স্থাপন করতে হবে। এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল কাজ। ইতিমধ্যেই ১০ আগস্ট পুরোনো ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করার প্রস্তাব দিয়ে নতুন ভবন নির্মাণের সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।”
অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে দাবি করেন, হলকে জেনেশুনে পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পাঁয়তারা চলছে। মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহিম বলেন, “আমরা অনতিবিলম্বে সংস্কার চাই। হলে যদি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়, তাহলে ছাত্র সমাজ রুখে দাঁড়াবে।”
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...