Logo Logo

ফরিদপুরে বিক্ষোভ-অবরোধে দুই মহাসড়কে ৪০ কিলোমিটার যানজট


Splash Image

ফরিদপুর-৪ আসনের ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ভাঙ্গায় মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুই মহাসড়ক দীর্ঘ সময় ধরে অবরোধের ফলে ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে অন্তত ৪০ কিলোমিটার এলাকায় জট সৃষ্টি হয়েছে। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ প্রায় বন্ধের মতো অবস্থায় পৌঁছেছে।


বিজ্ঞাপন


সকালে সকাল ৮টা থেকে স্থানীয়রা অবরোধ শুরু করে। অবরোধকারীরা টায়ারে আগুন জ্বালান, বাঁশ ও কাঠ ফেলে মহাসড়ক বন্ধ রাখেন। এ সময় মহাসড়কে ঘুমানোর চৌকি ফেলেও যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এর ফলে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে বরইতলা পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার, পুকুরিয়া থেকে তালমা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার, এবং ঢাকার দিকে বগাইল টোলপ্লাজা থেকে এক্সপ্রেসওয়ের পুলিয়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকায় যানজট দেখা দেয়।

ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ভাঙ্গা পৌরসভা থেকে জয়বাংলা পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে যানজট অন্তত ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়।

যাত্রীদের ভোগান্তি অনেকেরই সহ্য করার বাইরে। ঢাকার দিকে যাওয়া ব্যবসায়ী সেলিম মোল্লা বলেন, “ভোরে রওনা দিয়েছি, এখনো ভাঙ্গা পার হতে পারিনি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়িতে বসে আছি। খাবার-পানি শেষ হয়ে গেছে। এমন ভোগান্তি সহ্য করা কষ্টকর।”

গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় চিকিৎসার জন্য আসা লাইলী বেগম জানান, “সকাল থেকে ভাঙ্গায় আটকে আছি। গাড়ি নড়ছে না। সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছানো তো দূরের কথা, এখন বাড়িতে রাতের মধ্যে পৌঁছাতে পারব কিনা সেটাই ভাবছি।”

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, “অবরোধকারীরা একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন, যা নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। এটি স্থানীয় সমস্যা নয়, জাতীয় সমস্যা। সমাধানও জাতীয় পর্যায়ে খুঁজে বের করতে হবে।”

ভাঙ্গা থানা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা বলে মহাসড়ক খোলার চেষ্টা করেছেন। তবে বিপুলসংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণের কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। জরুরি কিছু যানবাহন ছাড়া সব ধরনের পরিবহন বন্ধ রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনের গেজেট অনুযায়ী ভাঙ্গা উপজেলার আলগী ও হামিরদী ইউনিয়ন ফরিদপুর-২ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার পর ৫ সেপ্টেম্বর দুই মহাসড়কের অন্তত সাতটি পয়েন্টে অবরোধ করা হয়। তখন তারা স্লোগান দেন, “আমার মাটি আমার মা, নগরকান্দায় যাব না।” তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হলেও, প্রতিবাদ সমাধান না হওয়ায় মঙ্গলবার পুনরায় মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।

এদিকে, নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দাখিল করা হয়েছে। রিটে বিএনপি নেতা মো. শহিদুল ইসলাম বাবুল ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান দুলাল সহ পাঁচজনের পক্ষে মামলা করা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...