Logo Logo

গোপালগঞ্জে সম্প্রসারিত বিসিকে সমৃদ্ধির আশা


Splash Image

বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) গোপালগঞ্জে ৫০ একর জমিতে সম্প্রসারিত শিল্পনগরী গড়ে তুলেছে। নৌ, সড়ক ও রেল যোগাযোগ সুবিধাসহ এই শিল্পনগরীতে দেশের বড় উদ্যোক্তারা শিল্প ইউনিট স্থাপনের জন্য প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। বর্তমানে কিছু শিল্প ইউনিট পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করেছে, যা জেলার মানুষের কর্মসংস্থানে ইতিমধ্যেই ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে।


বিজ্ঞাপন


গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীর কর্মকর্তা সুজন দাস বলেন, “শিল্প মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ১০২ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে সম্প্রসারিত শিল্পনগরী বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এখানে বিসিকের প্রশাসনিক ভবন, নিরাপত্তা, ডাম্পিং ইয়ার্ড, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, পানি ও ড্রেনেজসহ আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিসিক শিল্পনগরীতে মোট ১৩৪টি শিল্প প্লট রয়েছে। এর মধ্যে ৩৯টি প্লট উদ্যোক্তাদের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ছয়টি শিল্প ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করেছে, যা ২০০ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। সুজন দাস আশা প্রকাশ করেন, সব শিল্প ইউনিট কার্যক্রম শুরু হলে অন্তত ৫ হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।

পিসিএল পাওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের সত্ত্বাধিকারী মো: রমজান বলেন, “আমরা প্লট বরাদ্দ নিয়ে কারখানা স্থাপন করেছি এবং সম্প্রতি পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু করেছি। তবে পুরোপুরি উৎপাদন চালু করতে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সমস্যা সমাধান প্রয়োজন। চায়না থেকে ৫০০ টাকার যে পরিমাণ গ্লাস আমদানি করা যায়, গ্যাস থাকলে সেটি মাত্র ৬০ টাকায় উৎপাদন করা সম্ভব। আমরা রফতানিমুখী পণ্য তৈরি করতে পারলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও বৃদ্ধি পাবে।”

হারিদাসপুর গ্রামের শিক্ষক নাসির উদ্দিন (৫২) বলেন, “এই বিসিক শিল্পনগরী এলাকার মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের নতুন দিক খুলবে। আমাদের আশা, বর্তমান সরকার এই উদ্যোগকে ধরে রাখবে এবং বিসিকের মাধ্যমে আমাদের জেলার মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।”

স্থানীয় বাসিন্দা ইয়াসিন হোসেন রাকিব (৩১) বলেন, “আমাদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। অনেক স্বপ্ন ছিল এখানে কলকারখানা স্থাপিত হবে। কিছু ইউনিট উৎপাদনে গেছে, সেখানে শতাধিক মানুষ কাজ করছে। আমরা চাই সব ইউনিট উৎপাদনে চলে আসুক। এতে আমাদের জেলা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে।”

বণফুল এ্যান্ড কোম্পানীর শ্রমিক সাথী বেগম (২৫) জানান, “আমি প্যাকেজিং-এর কাজ করি। এখান থেকে যা পাই তা দিয়ে আমার সংসার চলে। শিল্পনগরীর সব ইউনিট চালু হলে আরও হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। তাই দ্রুত শিল্পায়ন চাই।”

গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মো: মোশাররফ হোসেন বলেন, “শিল্পনগরীর পরিবেশ শিল্পবান্ধব এবং রেল, সড়ক ও নৌপথে যোগাযোগ সহজ। ব্যবসায়ের মন্দাভাব কাটিয়ে উঠলে শিল্পায়ন আরও বৃদ্ধি পাবে এবং জেলাবাসীর আর্থিক উন্নয়নের স্বপ্ন পূরণ হবে।”

এ.কে.এম কামরুজ্জামান, এজিএম, গোপালগঞ্জ বিসিক বলেন, “বিদ্যুৎ বিভাগের সাথে কথা বলে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করা হবে। গ্যাসের ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। সম্ভাবনাময় এই শিল্পনগরীর সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী জেলার মানুষের জন্য নতুন কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে। শিল্পায়নের মাধ্যমে স্থানীয় ও জাতীয় অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার প্রতিশ্রুতি নিয়ে এই শিল্পনগরী কার্যক্রম শুরু করেছে।

প্রতিবেদক- মনোজ সাহা, গোপালগঞ্জ।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...