Logo Logo

হাত না থাকায় জাতীয় পরিচয়পত্র পাচ্ছেন না ফরিদপুরের জসিম


Splash Image

জন্ম থেকে দুই হাত নেই ফরিদপুরের জসিম মাতুব্বরের। পা দিয়ে লিখে তিনি প্রাথমিক থেকে এইচএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে জসিম ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তবে তার জীবনের সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)।


বিজ্ঞাপন


হাত না থাকায় আঙ্গুলের ছাপ দিতে পারছেন না, তাই তিন বছর ধরে আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত জসিমকে দেওয়া হয়নি এনআইডি কার্ড।

নগরকান্দা উপজেলার তামলা ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের হানিফ মাতুব্বর ও তসিরণ বেগম দম্পতির ছেলে জসিম মাতুব্বর (২৬) চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড়। তিনি ২০১৬ সালে একটি ভ্যানগাড়ি এবং ২০২২ সালে ৬০ হাজার টাকা পুরস্কার পান তৎকালীন জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে। এ পুরস্কারগুলো তার জীবন চলার পথে বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে।

জসিম মাতুব্বর বলেন, “আমার দুটি হাত নেই, পা দিয়ে লিখে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করেছি। এখন আমি সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। কলেজের কাজসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কাজে বা সেবা পেতে জাতীয় পরিচয়পত্রের দরকার হয়। এটার জন্য নির্বাচন কমিশন অফিসে অনেকবার আবেদন করেছি। কিন্তু হাত নেই বলে আঙুলের ছাপ দিতে পারছি না। এই কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র হচ্ছে না।”

তিনি আরও বলেন, “২০২৩ সাল থেকে ঘুরছি নির্বাচন অফিসে। কিন্তু কোনো কাজই হয়নি। তারা আমাকে অনলাইনে আবেদন করতে বলেছিলেন। একাধিকবার আবেদনও জমা দিয়েছি। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। এখন আর যাই না, হাল ছেড়ে দিয়েছি। পেশাগতভাবে পড়াশোনা ও সংসারের খরচ চালাতে হাটে সবজি বিক্রি করি। যা আয় হয়, তা দিয়ে চলে যায়।”

নগরকান্দা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাওন সাগর বলেন, “আমি নতুন যোগদান করেছি। যেহেতু ছেলেটির শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আছে, কাজেই তার এনআইডি কার্ডটি করে দিতে আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”

জসিমের মতো শারীরিক প্রতিবন্ধী অনেক নাগরিকের জন্য এনআইডি ছাড়াই জীবনযাপন করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে শিক্ষাগত ও পেশাগত অগ্রগতি, অন্যদিকে সরকারি সেবা ও আইডেন্টিটি ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তি—সবকিছুর জন্য এনআইডি অপরিহার্য। বিশেষ করে জসিমের মতো প্রতিবন্ধী নাগরিকদের জন্য এই বাধাগুলো দ্রুত দূর করা জরুরি।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...