বিজ্ঞাপন
কোটালীপাড়া উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারি দায়িত্বের সময় তিনি ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় অধিক সময় ব্যয় করছেন।
স্থানীয় সূত্র ও একাধিক শিক্ষক অভিযোগ করেছেন, প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সময় চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে ইউসুফ লক্ষ লক্ষ টাকা, ফাঁকা চেক ও স্ট্যাম্প গ্রহণ করে প্রতারণা করেছেন। টুঙ্গিপাড়ায় কর্মরত থাকা অবস্থায় নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগে তিনি সাময়িকভাবে বরখাস্তও হয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
দৈনিক আমাদের কণ্ঠ পত্রিকার প্রতিনিধির সরেজমিন তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। দেখা গেছে, গোপালগঞ্জ শহরের চাঁদমারি রোডের ২৪২ নম্বর হোল্ডিংয়ে “রাইয়ান মডার্ন লন্ড্রি অ্যান্ড ড্রাই ক্লিন” নামে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন কে. এম. ইউসুফ। প্রতিষ্ঠানের ভিজিটিং কার্ডেও তাকে পরিচালক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও সেখানে কোনো ট্রেড লাইসেন্স নেই।
কস্তুরী নামের এক ভুক্তভোগী গ্রাহক জানান, প্রতিষ্ঠানটি আধুনিকভাবে সাজানো হলেও দক্ষ টেকনিশিয়ান না থাকায় গ্রাহকের পোশাক নষ্ট হচ্ছে। তিনি বলেন, “গত ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে আমার সাড়ে ৮ হাজার টাকার একটি জামদানী শাড়ি নষ্ট করেছে প্রতিষ্ঠানটি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কে. এম. ইউসুফ দৈনিক ভোরের বাণী পত্রিকার সাংবাদিককে মোবাইল ফোনে হুমকির সুরে বলেন, “আপনারা যা পারেন লিখেন, আমি এগুলোকে তোয়াক্কা করি না।”
গোপালগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা এম. রকিবুল ইসলাম বলেন, “রাইয়ান মডার্ন লন্ড্রি অ্যান্ড ড্রাই ক্লিন নামে কোনো ট্রেড লাইসেন্স আমাদের দপ্তর থেকে ইস্যু করা হয়নি। ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া পৌর এলাকায় ব্যবসা পরিচালনা আইনবিরুদ্ধ। দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কোটালীপাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (টিও) শেখর রঞ্জন ভক্ত জানান, “কোনো সরকারি চাকরিজীবীর ব্যবসা করার সুযোগ নেই। যদি তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে থাকেন, দাপ্তরিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিও) মোছাঃ জোৎস্না খাতুন বলেন, “প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মকর্তা ব্যক্তিগত ব্যবসা করতে পারেন না। আমরা অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত ব্যবসা পরিচালনা—দুটি বিষয়ই আইনের পরিপন্থী। গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও শিক্ষা দপ্তরের তদন্তের ফলাফলের দিকে এখন সবার দৃষ্টি।
প্রতিবেদক- কে এম সাইফুর রহমান, গোপালগঞ্জ।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...