বিজ্ঞাপন
ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে ভাঙ্গা ইন্টারচেঞ্জ পর্যন্ত অংশটি ঢাকা–বরিশাল মহাসড়কের অন্যতম ব্যস্ত রুট। ফরিদপুর সদর উপজেলার বাখুন্ডা, নগরকান্দার কেশবনগর, তালমা, বাশাগাড়ি, মাশাউজান, শংকরপাশা, ভবুকদিয়া, পুকুরিয়া হামিরদী ও ভাঙ্গা উপজেলার নওয়াপাড়া পর্যন্ত পুরো ৩২ কিলোমিটার জুড়েই একই চিত্র। যানবাহনের চাকা গর্তে পড়লে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি লাগে; প্রতিদিন ঘটছে দুর্ঘটনা।
সম্প্রতি সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ফরিদপুরের বাখুন্ডা সেতু এলাকায় গর্তে ইট ফেলে অস্থায়ীভাবে সংস্কারের চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু গর্তে পানি জমে থাকায় যানবাহন চলে ধীরগতিতে। পুরো সড়কজুড়ে কোথাও বড়, কোথাও ছোট ছোট গর্ত। ফলে বাস-ট্রাকগুলো চলাচল করে হেলেদুলে। অনেক জায়গায় এমন অবস্থাও দেখা যায় যে, একটি যানবাহন গেলে পাশ দিয়ে আরেকটি গাড়িকে থেমে সাইড দিতে হয়।
নগরকান্দার তালমা বাজারের ব্যবসায়ী রফিক মোল্লা বলেন, “প্রতিদিন কাদা আর ধুলোয় দোকানদারদের নাভিশ্বাস ওঠে। রাস্তা এমন হয়ে গেছে যে, বৃষ্টি নামলে মনে হয় মাটির রাস্তা। এত ভাঙাচোরা একটা মহাসড়ক হতে পারে, এটা বিশ্বাস করা কঠিন।”
শংকরপাশা গ্রামের স্কুলশিক্ষক মেহেদী হাসান বলেন, “আগে আধা ঘণ্টায় স্কুলে পৌঁছাতাম, এখন লাগে দেড় ঘণ্টা। শুরুতে চালকদের দোষ দিতাম, এখন বুঝেছি—তাদের কিছু করারও নেই।”
টেকেরহাট–ফরিদপুর পথে চলাচলকারী আল্লারদান পরিবহনের চালক রবিউল ইসলাম জানান, “এই রাস্তায় গাড়ি চালানো মানে স্টিয়ারিং ধরে যুদ্ধ করা। প্রতিদিন মনে হয় বাস উল্টে যাবে। মাঝে মাঝে দেখি কাজ হচ্ছে, কিন্তু গতি এত কম যে একপাশ ঠিক করতে করতে অন্যপাশ আবার ভেঙে যায়।”
এদিকে, টানা বৃষ্টিতে গর্তগুলো আরও গভীর হয়েছে। রাস্তার দুই পাশের মাটি সরে গিয়ে কয়েকটি সেতু অংশ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। রাতে গাড়ি চালাতে চালকদের বাড়তি সতর্ক থাকতে হচ্ছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা লায়লা বেগম বলেন, “রাতে গাড়ি এলে বোঝা যায় না কোথায় গর্ত, কোথায় রাস্তা। একটু অসাবধান হলেই দুর্ঘটনা ঘটে। মোটরসাইকেল চালকদের জন্য তো এই রাস্তা এখন আতঙ্কের নাম।”
ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী খালিদ সাইফুল্লাহ সরদার বলেন, “ফরিদপুর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত অংশে সংস্কারের কাজ চলছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দ্রুত কাজ শেষের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টির কারণে কিছুটা বিলম্ব হলেও দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করছি। আপাতত ইট-পাথর ফেলে গর্ত ভরাটের কাজ তড়িৎ গতিতে করা হচ্ছে।”
স্থানীয়দের দাবি, মহাসড়কটির বর্তমান অবস্থা শুধু দুর্ভোগ নয়, এটি এখন প্রাণহানির আশঙ্কা বয়ে আনছে। তারা দ্রুত ও টেকসই সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...