বিজ্ঞাপন
রবিবার (১৯ অক্টোবর) সকালে নিজ আইনজীবীসহ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন দেলোয়ার হোসেন। এ সময় একদল শিক্ষার্থী তাকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেনের কক্ষে চাকরিতে পুনর্বহালের আবেদন জমা দিতে যান তিনি।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, “আমাকে অবৈধভাবে চাকরিচ্যুত করা হলে আমি আদালতে মামলা করি। প্রথমে হাইকোর্ট আমাকে সাভার আঞ্চলিক আদালতে পাঠায়। সেখানে চার বছর ধরে মামলা চলে। বিবাদী পক্ষ এক বছর হাজিরাই দেয়নি। শেষ পর্যন্ত আদালত রায় দেন আমার চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে।”
তিনি আরও জানান, “আমি চাই সঠিক আইনি প্রক্রিয়ায় আমার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা হোক। আদালত আমাকে রেজিস্ট্রার পদে পুনর্বহাল করেছেন এবং বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধেরও নির্দেশ দিয়েছেন।”
তবে দেলোয়ার হোসেনের পুনর্বহালের খবরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীদের আরেক অংশ। তাদের দাবি, আদালতে ‘ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য’ উপস্থাপন করে রায় আদায় করেছেন তিনি। অভিযোগ ওঠে, দেলোয়ার হোসেন “দুর্নীতিগ্রস্ত ও চরিত্রহীন”। এসব অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কক্ষে বিক্ষোভ শুরু করে।
‘লম্পটের গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘ভুয়া-ভুয়া’, ‘লম্পটের চামড়া তুলে নেব আমরা’—এমন স্লোগানে মুহূর্তেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে প্রশাসনিক ভবন এলাকা। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে পড়লে শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন দেলোয়ার হোসেন।
দেলোয়ার হোসেনের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কৃষ্ণ বলেন, “দীর্ঘ পাঁচ বছর মামলা পরিচালনার পর ৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে আদালত রায় দেন। রায়ে উল্লেখ আছে, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে তার চাকরিচ্যুতির আদেশ অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। আদালত তাকে পুনর্বহাল ও বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন।”
তিনি আরও জানান, “আজ আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে ভিসির কাছে আবেদন করা হলে প্রথমে তিনি তা গ্রহণ করেন, কিন্তু শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে গ্রহণ স্থগিত রাখেন। যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন গ্রহণ না করে, আমরা আবার আদালতের শরণাপন্ন হবো।”
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন বলেন, “আমরা কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ চাই না। সব কিছু আইনি প্রক্রিয়ায় হবে। ট্রাস্টি বোর্ড ও আইন উপদেষ্টাদের মতামত নিয়েই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
তিনি আরও বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে আপাতত নথি গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে না।”
উল্লেখ্য, দেলোয়ার হোসেন এর আগে দীর্ঘদিন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগ ওঠে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে ২০২০ সালে একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তিনি আদালতে রিট করলে সম্প্রতি আদালত তার পক্ষে রায় দেন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...