ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের বলরুমে ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম আলী এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, “আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, কার্গো ভিলেজের মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কার্যকর ফায়ার ডিটেকশন ও প্রটেকশন সিস্টেম নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।”
ইএবি সভাপতি জানান, কার্গো ভিলেজ মূলত তৈরি পোশাক শিল্পের উদ্যোক্তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখান থেকে হালকা যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিক পণ্য, তৈরি পোশাকের কাঁচামাল, অ্যাক্সেসরিজ এবং নমুনা আমদানি ও রপ্তানি করা হয়। এছাড়া আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসগুলোও গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র ও পার্সেল আদান-প্রদানের জন্য এই স্থান ব্যবহার করে থাকে।
তিনি আরও বলেন, ফার্মাসিউটিক্যালস শিল্পের উদ্যোক্তারা কাঁচামাল আমদানির পাশাপাশি ওষুধ রপ্তানিতেও কার্গো ভিলেজের ওপর নির্ভরশীল। তাছাড়া হিমায়িত খাদ্য, কৃষিপণ্য, শাকসবজি, ফলমূলসহ অন্যান্য পচনশীল পণ্য রপ্তানিকারকেরাও এই ভিলেজের সেবার ওপর নির্ভর করে থাকেন। এসব পণ্য সময়মতো বিদেশে না পৌঁছালে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে, ফলে অগ্নিকাণ্ডের মতো ঘটনা রপ্তানি শিল্পের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
মোহাম্মদ হাতেম আলী বলেন, “এই অগ্নিকাণ্ডে সরাসরি ক্ষতি হয়েছে আগুনে পুড়ে যাওয়া পণ্যে, তবে সেটিই কেবল নয়—পুড়ে যাওয়া কাঁচামাল থেকে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানি না হওয়ায় আরও বড় ক্ষতি হয়েছে। সামনের কয়েকদিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম ব্যাহত থাকবে, ক্রেতাদের আস্থা কমবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে অবস্থান হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।”
ইএবি সভাপতি জানান, সদস্যদের কাছে জরুরি বার্তা পাঠিয়ে ক্ষতির পরিমাণ জানতে চেষ্টা চলছে, যদিও এখনো পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া যায়নি। একটি স্বচ্ছ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের মাধ্যমে সামগ্রিক ক্ষতির সঠিক চিত্র পাওয়া সম্ভব হবে। তবে প্রাথমিকভাবে সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় এক বিলিয়ন ডলার বা ১২ হাজার কোটি টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “বিদেশি ক্রেতারা এই অগ্নিকাণ্ডের খবরে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হতে পারেন, যার ফলে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।”
মোহাম্মদ হাতেম আলী প্রশ্ন তোলেন, “ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার দায় কেউ যেন এড়াতে না পারে—সেজন্য দায়িত্ব অবহেলার শাস্তি হবে কি?”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে বের করতে সরকারের পক্ষ থেকে অবিলম্বে একটি স্বচ্ছ ও কার্যকর তদন্ত শুরু করা জরুরি। গত কয়েক দিনে আশুলিয়া, মিরপুর, চট্টগ্রাম ইপিজেড এবং সর্বশেষ ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসে ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই ধারাবাহিকতা উদ্যোক্তাদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে।”
সংবাদ সম্মেলনে ইএবি’র সদস্য ও বিভিন্ন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...