বিজ্ঞাপন
বিগত সময়ে এই আসন থেকে নির্বাচিতরা সংসদ উপনেতা, মন্ত্রী, হুইপ-সহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করায় এর গুরুত্ব দলগুলোর কাছে সর্বোচ্চ। তবে, আসন্ন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ মাঠে না থাকায় এই আসনে ছোট এবং বড় দলগুলোর জন্য 'টার্নিং-পয়েন্ট' তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, সব রাজনৈতিক দলই মনোনয়ন প্রদানে যথেষ্ট হিসেব-নিকেশ কষতে শুরু করেছে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সূত্রমতে, এখন পর্যন্ত শেরপুর-২ আসনে বিএনপি, জামায়াত-সহ অন্যান্য দলের মোট ১৫ জন প্রার্থীর নাম আলোচনায় রয়েছে। ভোটারদের ধারণা, শেষ পর্যন্ত মূল লড়াইটা হতে পারে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে। ভোটের মাঠে পাঁচ থেকে ছয়জন প্রার্থী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিএনপির আট মনোনয়ন প্রত্যাশী:
নতুন-পুরাতন মিলিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে ৮ জন মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে রয়েছেন। এরা হলেন:
১. প্রকৌশলী ফাহিম চৌধুরী: শেরপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি সাবেক হুইপ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মরহুম জাহেদ আলী চৌধুরীর ছেলে। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন। ২. ইলিয়াস খান: কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। ৩. এডভোকেট মাজহারুল ইসলাম বাবু: দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি ও জনসেবার সাথে সম্পৃক্ত। ৪. আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ ফয়জুর রহমান: কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি। ৫. দুলাল চৌধুরী: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা এবং জাপান প্রবাসী। ৬. একেএম মোখলেছুর রহমান রিপন: জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। ৭. ফজলুর রহমান তারা: জেলা বিএনপির ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক। ৮. সিরাজুল ইসলাম মানিক: ছাত্রনেতা।
এই প্রার্থীরা সকলেই তারেক রহমানের ৩১ দফার লিফলেট নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন এবং বেকারত্ব দূরীকরণ, রেললাইন স্থাপন, মেডিকেল কলেজ স্থাপন-সহ গণমানুষের দাবি নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। দলটির সংসদীয় আসনের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, একাধিক প্রার্থী থাকলেও দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে কেউই বিদ্রোহী হবেন না।
জামায়াতের একক প্রার্থী:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এই আসনে এককভাবে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে শেরপুর জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি গোলাম কিবরিয়া ভিপি-কে। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সাবেক বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তরুণ প্রার্থী হিসেবে তিনি ইতোমধ্যে ভোটারদের মন জয় করে নিয়েছেন।
অন্যান্য দলের প্রার্থীরা:
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে ২ জন মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন: শেরপুর জেলা এনসিপির ১ নং যুগ্ম সমন্বয়কারী আলমগীর কবির মিথুন এবং শ্রমিক উইং কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী তৌহিদুল ইসলাম। এনসিপির নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, শেষ পর্যন্ত একজন প্রার্থীই থাকবেন।
এছাড়াও, অন্যান্য দলের আরও ৫ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে থাকার ইঙ্গিত দিচ্ছেন: ১. মাওলানা আব্দুল্লাহ আল কায়েস: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (নালিতাবাড়ী উপজেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি)। ২. মাওলানা আব্দুল্লাহ বাদশা: আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। ৩. কাজী হায়াত: গনঅধিকার পরিষদ (জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক)। ৪. মাওলানা মোখলেছুর রহমান: বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস।
২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে এই আসনটি আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, আসন্ন নির্বাচনে তাদের অনুপস্থিতি ছোট দলগুলোর জন্য বড় সুযোগ তৈরি করেছে। এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছে না জামায়াত-সহ অন্যান্য ছোট রাজনৈতিক দলগুলো। নিজেদের ভোট নিজেদের দখলে রাখতে সকল দলের প্রার্থীরাই তৃণমূল পর্যায়ে দিনরাত জনসংযোগ ও প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...