Logo Logo

পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখে সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার


Splash Image

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে যেকোনো নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্ত রেখে সড়ক, রেল, বিমান ও নৌপথের সমন্বিত এবং দ্রুত উন্নয়ন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।


বিজ্ঞাপন


রোববার (২ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘সেন্ট্রাল ইন্টিগ্রেটেড মাল্টিমোডাল ট্রান্সপোর্ট সেক্টর মাস্টার প্ল্যান অব বাংলাদেশ’ সংক্রান্ত প্রান্তিক মূল্যায়ন ও কৌশলগত পরিকল্পনা বিষয়ক এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে তিনি এই আহ্বান জানান।

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার বর্তমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি (হযবরল অবস্থা) নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই ব্যবস্থা দ্রুত শৃঙ্খলার মধ্যে আনা না গেলে এটি পুরো অর্থনীতির জন্য 'গলার ফাঁসে' পরিণত হবে।

তিনি পরিবেশ রক্ষার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করে বলেন, "আমাদেরকে এই কাজটা করতে হবে পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে। নদীর ওপর কোনো আঘাত করা যাবে না, পানিকে শান্ত রাখতে হবে, মনে রাখতে হবে পানি আমাদের জন্য বিরাট সম্পদ।"

বৈঠকে সড়ক ও জনপথ বিভাগ একটি প্রাথমিক কৌশলগত পরিকল্পনা উপস্থাপন করে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পারস্পরিক সমন্বয়ের ভিত্তিতে এই পরিকল্পনাটি তৈরি করেন। এতে দেখানো হয়, পুরো দেশের সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থার সমন্বয় এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অল্পবিস্তর সংস্কার ও সংযোজনের মাধ্যমে কীভাবে পুরো যোগাযোগ ব্যবস্থাকে শৃঙ্খলার মধ্যে নিয়ে আসা যায়।

পরিকল্পনায় বলা হয়, দেশে বর্তমানে থাকা রেলপথ, নৌপথ এবং সড়কপথের যথাযথ ব্যবহার ও কিছু ক্ষেত্রে কিছুটা বাড়ানো গেলেই যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নতি সম্ভব।

প্রধান উপদেষ্টা যোগাযোগ খাতের সবগুলো ব্যবস্থাকে সমন্বয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা প্রণয়ন করায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এই পরিকল্পনার ফলে প্রাথমিকভাবে একটি শক্তিশালী ধারণা পাওয়া গেল। এখন এটিকে বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, পুরো পরিকল্পনা অবশ্যই অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে মাথায় রেখে করতে হবে। অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনার পাশাপাশি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, "আমরা যখন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে নদীর কথা চিন্তা করব, তখন অবশ্যই আমাদেরকে মাথায় রাখতে হবে নদীগুলো আমাদের প্রাণ।"

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (সড়ক ও রেল) ড. শেখ মইনউদ্দিন বলেন, “যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি সামষ্টিক মডেল দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, যার মাধ্যমে অর্থনৈতিক লাইফলাইনটা গড়ে ওঠে।”

পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “যেসব ক্ষেত্রে ছোট ছোট কিছু সড়ক নির্মাণ করে দিলেই পুরো অঞ্চলটাকে জাতীয় কানেকটিভিটির মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব, সেসব ক্ষেত্রে দ্রুত পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।”

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “স্থানীয় সরকার বিভাগের কাজগুলোকে আরও পরিকল্পিতভাবে করার লক্ষ্যে একটি 'প্ল্যানার্স উইং' গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়।”

বিডা চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, “২০৩০ সালের মধ্যে চট্টগ্রামে আরও তিনটি নতুন বন্দর চালু হবে। এই বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এসব বন্দর থেকে সড়ক যোগাযোগ যেন সহজ ও কার্যকর হয়, সে বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে উদ্যোগ নিতে হবে।”

বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পদস্থ কর্মকর্তারা।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...