Logo Logo

ভাঙ্গায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৪৭


Splash Image

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় স্থানীয় আধিপত্যকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৪৭ জন। এ সময় ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটেছে।


বিজ্ঞাপন


রোববার (২ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টাব্যাপী ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের গোপীনাথপুর ও ছোট হামিরদী গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে লিপ্ত দুই পক্ষের নারী-পুরুষ সবাই ঢাল, সড়কি, রামদাসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে পরস্পরকে আক্রমণ করে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, হামিরদী ইউনিয়নের ছোট হামিরদী ও গোপীনাথপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন ছোট হামিরদী গ্রামের লিটন মাতুব্বর (৫৫) এবং অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন গোপীনাথপুর গ্রামের কুদ্দুস মুন্সী (৬০)।

গত ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যায় লিটন মাতুব্বরের পক্ষের সাইমন শেখের সঙ্গে কুদ্দুস মুন্সীর জমিজমা-সংক্রান্ত বিষয়ে তর্ক-বিতর্কের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উভয়পক্ষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং পরদিন সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয়। স্থানীয় মুরব্বিরা তখন সালিশ বৈঠকের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন।

রোববার বিকেলে সেই সালিশ বৈঠক বসার কথা থাকলেও বৈঠক শুরুর আগেই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে উভয় পক্ষের শতাধিক লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। টানা তিন ঘণ্টা ধরে চলে হামলা-পাল্টা হামলা, যা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষে আহতদের ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়। এর মধ্যে গুরুতর আহত পাঁচজন—বাবুল মুন্সী (৫৪), বিপ্লব হোসেন (৪০), সবুজ শেখ (৩৪)সহ কয়েকজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে রয়েছেন—শাহ আলম (২০), বিপ্লব মুন্সী (৪৫), তোহির উদ্দিন ফকির (৫০), সবুজ মুন্সী (৪৫), হৃদয় হোসেন (২৫), সাজ্জাদ মাতুব্বর (১৯), রাজিব হোসেন (২৫), সুজন মাতুব্বর (২৩), হায়দার মাতুব্বর (২২), আবুল মুন্সী (৬০), হাবিব মিয়া (৩৫), শেখ বাবর আলী (৬৪), মোহাম্মদ দুলাল মাতুব্বর (৬৭) প্রমুখ।

ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তানসিভ জুবায়ের বলেন, “সংঘর্ষে আহত হয়ে ৪৭ জন চিকিৎসা নিতে আসেন। তাদের মধ্যে গুরুতর পাঁচজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, আহতদের বেশিরভাগের শরীরে দেশীয় অস্ত্র ও ইটের আঘাত রয়েছে।

হামিরদী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিজান মুন্সী বলেন, “গোপীনাথপুর গ্রামের সাইমন মাতুব্বর ও কুদ্দুস মুন্সীর মধ্যে জমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ থেকেই এ সংঘর্ষের সূত্রপাত। সালিশ বৈঠকে সমঝোতা না হওয়ায় উভয় পক্ষের সমর্থকরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুরও হয়।”

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফ হোসেন বলেন, “স্থানীয় আধিপত্যকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।”

তিনি আরও জানান, “ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জেলা পুলিশ লাইন্স থেকে অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...