বিজ্ঞাপন
রোববার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এর আগে শনিবার (৮ নভেম্বর) মধ্যরাতে বোয়ালমারী থানায় মামলা দুটি নথিভুক্ত করা হয়।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে খন্দকার নাসিরুল ইসলাম ও শামসুদ্দীন মিয়ার মধ্যে। এই দ্বন্দ্ব ঘিরে উপজেলা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত।
গত শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে উপজেলা সদরে দুই পক্ষ পৃথক স্থানে সমাবেশ করে। সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে আসার সময় মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হন। ভাঙচুর করা হয় শামসুদ্দীনপন্থি বিএনপি কার্যালয়সহ কয়েকটি দোকান, আর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় অন্তত ১২টি মোটরসাইকেল।
নাসিরুলের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার বাদী বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম। এই মামলায় প্রতিপক্ষের নেতা শাহবুদ্দীনকে প্রধান আসামি করার পাশাপাশি দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও জনতা পার্টির উপদেষ্টা কমিটির এক নম্বর সদস্য শাহ মো. আবু জাফরকে। তৃতীয় আসামি হিসেবে রয়েছেন সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড় খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু।
এ মামলায় ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০–৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে, শামসুদ্দীনের পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার বাদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান। এ মামলায় খন্দকার নাসিরুলসহ ১৮৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০০–২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নাসিরুলপন্থি বাদী সিরাজুল ইসলাম বলেন, “বিএনপি নেতা শামসুদ্দিনের নেতৃত্বে আমাদের মিটিংয়ে বর্বর হামলা চালানো হয়েছে। শামসুদ্দিনই শাহ জাফরের লোক। পাশের সালথা থেকে বাচ্চুর লোকজন এনে শান্ত বোয়ালমারীকে অশান্ত করেছেন।”
শাহ জাফর ও বাচ্চুকে কেন আসামি করা হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তারা হুকুমদাতা। তাদের নির্দেশেই আমাদের ওপর হামলা হয়েছে।”
অন্যদিকে, শামসুদ্দিনপন্থি বাদী মজিবুর রহমান বলেন, “নাসিরুলের লোকজন পিস্তল নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। আমাদের অফিস ভাঙচুর ও মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সবকিছুই নাসিরুলের হুকুমে হয়েছে।”
নিজের নাম মামলার আসামির তালিকায় দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য শাহ মো. আবু জাফর। তিনি বলেন, “আমি এলাকায়ও যাই না, সংঘর্ষের ঘটনাও জানি না। আমি কোনো পক্ষের নই। তবুও কেন আমাকে আসামি করা হলো, তা আমার বোধগম্য নয়।”
বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান বলেন, “শনিবার রাতে দুটি মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...