বিজ্ঞাপন
মুকসুদপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আব্দুল হাকিম জানিয়েছেন, নিহত শামীম মিয়ার মৃত্যু নিয়ে নিহতের মা মেহেরুন নেছা ওরফে পাচি বেগম (৬০) ১২ নভেম্বর মুকসুদপুর থানায় চার গ্রামের ৪৩ জন ও অজ্ঞাত আরও ১৫০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া গরু চুরির ঘটনায় সাতজনকে আসামি করে পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তারা সবাই গ্রেফতার হয়েছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, শামীম মিয়া মুকসুদপুর উপজেলার পশারগাতি ইউনিয়নের বাহিরবাগ গ্রামের মৃত মুন্নু মিয়ার ছেলে। তিনি অটোভ্যান চালক ছিলেন। ১১ নভেম্বর সোমবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন শামীম। পরদিন সকালে পরিবারের সদস্যরা মনে করেন তিনি কাজে গেছেন। কিন্তু দুপুরে খবর আসে, শামীম মিয়া মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মারা গেছেন।
পরিবার হাসপাতালে গিয়ে তাঁর মরদেহের শরীরে বিভিন্ন স্থানে জখম লক্ষ্য করেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, শামীমকে পরিচিত কয়েকজন—ফারুক শেখ, সুমন হাওলাদার, লিটন সরকার, সোহাগ, ইলিয়াস, মোজাহিদ ও বিপ্লব—রাতে ডেকে নিয়ে যান। তারা কৃষ্ণাদিয়া এলাকায় গরু চুরি করে একটি মিনি ট্রাকে পালানোর সময় জনতা ধাওয়া দিলে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে হাজিরবাগ গ্রামে রাস্তার পাশে উল্টে যায়। এরপর গ্রামবাসী তাদের আটক করে পিটুনি দেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় আটজনকে উদ্ধার করে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম মিয়া মারা যান। পরে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ আড়াইশ’ বেড জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। ১২ নভেম্বর ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মুকসুদপুর থানার তদন্ত কর্মকর্তা এ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট আহত ও গ্রেফতার ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করেছেন। আহতদের মধ্যে লিটন (৩০), সুমন হাওলাদার (৩২), ইলিয়াস সরদার (৩৫), ফারুক শেখ (৪৫), সোহাগ (৪১), বিপ্লব সরকার (৩২) এবং ফয়সাল মিয়া (৪৫) রয়েছেন। এদের মধ্যে চারজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার সময় হাজিরবাগ গ্রামে প্রায় দেড় কিলোমিটার জুড়ে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। হত্যা মামলা দায়ের হওয়ার পর চার গ্রামের পুরুষরা গ্রেপ্তার আতঙ্কে গা ঢাকা দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১১ নভেম্বর মুকসুদপুর উপজেলার পশারগাতি ইউনিয়নের হাজিরবাগ গ্রামে গরু চুরি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে শামীম মিয়া নিহত হন এবং আরও সাতজন আহত হন। পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলেও শামীম মিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
জনপ্রিয়
আরো দেখুন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...
