বিজ্ঞাপন
জানা যায়, গত ১৯ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে বাজারে গিয়ে মাংস কোপানোর খাটিয়ায় কয়েকটি কুকুর বসে থাকতে দেখে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মোবাইলে ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন সফিক শিমুল। এ সময় তিনি বিষয়টি স্থানীয় মাংস বিক্রেতা শফিক খানকে জানান। তখন শফিক খান তাকে সংবাদ প্রকাশ না করার অনুরোধ করেন এবং বাজারের অন্যান্য মাংস বিক্রেতাদের সতর্ক করার আশ্বাস দেন। পরে তিনি নিজের মাংস কোপানোর খাটিয়া পলিথিন দিয়ে ঢেকে সেটির ছবি তুলে সাংবাদিককে পাঠান।
পরদিন বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শফিক খান ফোন করে সাংবাদিককে বাজারে চা খাওয়ার কথা বলে ডেকে নেন। সেখানে আরও কয়েকজন মাংস ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় গিমাডাঙ্গা গ্রামের মিজান বিশ্বাস উত্তেজিত হয়ে সফিক শিমুলের উদ্দেশ্যে বলেন, “এসব ধান্দাবাজি বাজারে করবেন না, ভবিষ্যতে কোনো ছবি তুলবেন না।” এরপর মিজানসহ কয়েকজন তাকে হুমকি দেন এবং লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করেন সাংবাদিক।
ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমরান শেখ মিজান বিশ্বাসকে ফোন করে ব্যাখ্যা চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে পরে কথা বলবেন জানিয়ে ফোন কেটে দেন।
পাটগাতি বাজারের নিয়মিত ক্রেতা দুখু শেখ বলেন, মাংস কোপানোর খাটিয়ায় কুকুর বসে থাকা অত্যন্ত নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর। এ ধরনের মাংস থেকে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। আরেক ক্রেতা রুবেল তালুকদার বলেন, সাংবাদিক জনস্বার্থে বিষয়টি তুলে ধরেছেন, অথচ তাকে হুমকি দেওয়া দুঃখজনক। এ বিষয়ে বাজার কমিটি ও প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত।
পাটগাতি বাজার বণিক সমিতির আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি মারফুদুর রহমান বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাদ্য বিক্রি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কুকুর ওঠার মতো অব্যবস্থাপনা দুঃখজনক এবং সাংবাদিককে হুমকি বা অসদাচরণ করাও অনুচিত। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হবে। প্রয়োজনে কঠোর পদক্ষেপও নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানভীর আহমেদ বলেন, কুকুরের শরীরে সালমোনেলা, ই-কোলাইসহ বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস থাকে। এগুলো মাংসের খাটিয়া বা মাংসে লেগে গেলে তা দ্রুত দূষিত হয়। এ ধরনের মাংস খেলে ডায়রিয়া, ফুড পয়জনিং, টাইফয়েডসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তিনি খাদ্য বিক্রির স্থানে কুকুরের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানান।
তিনি আরও বলেন, নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ অনুযায়ী অস্বাস্থ্যকর খাদ্য বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ। এই অপরাধে ১ থেকে ৩ বছর কারাদণ্ড অথবা সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...