ছবি: ভোরের বাণী।
বিজ্ঞাপন
তাদের সম্মিলিত ডাকে সাড়া দিয়ে মোটরসাইকেল, জীপ, প্রাইভেট কার ও পিকাপ ভ্যানে করে কয়েক হাজার নেতাকর্মী নির্বাচনী এলাকায় বড় ধরনের শোডাউন করেছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জ-২ আসনের বিএনপি রাজনীতিতে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
ডাঃ কেএম বাবরের মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে নেমেছেন মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও এমপি এফ-ই শরফুজ্জামান জাহাঙ্গীর, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি এমএইচ খান মঞ্জু, গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুর রহমান তাজ এবং বিএনপি নেতা সরদার নুরুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১১টায় গোপালগঞ্জ সড়ক ভবনের সামনে থেকে এই পাঁচ নেতার নেতৃত্বে বিশাল শোডাউন কর্মসূচি শুরু হয়ে গোপালগঞ্জ-২ আসনের বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
নেতাকর্মীদের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে, দলের তৃণমূল পর্যায়েও বর্তমান প্রার্থীর মনোনয়ন নিয়ে অসন্তোষ তীব্র। মনোনয়ন বঞ্চিত নেতারা অভিযোগ করেছেন, ডাঃ বাবরের মনোনয়ন দলের দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত ও ত্যাগী কর্মীদের প্রত্যাশা পূরণ করেনি এবং এর ফলে স্থানীয় রাজনীতিতে হতাশা তৈরি হয়েছে।
শোডাউনে অংশ নেওয়া হাজার হাজার নেতাকর্মী বিভিন্ন যানবাহনে সজ্জিত হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের প্রধান দাবি ছিল একটাই— দলের নীতিনির্ধারকদের দ্রুত ডাঃ কেএম বাবরের মনোনয়ন বাতিল করে জনপ্রিয় ও তৃণমূলের আস্থাভাজন নেতাদের মধ্য থেকে একজনকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা।
সকাল থেকে শুরু হওয়া এই জনসংযোগ কর্মসূচিতে নির্বাচনী এলাকার প্রধান প্রধান সড়কগুলো সরগরম হয়ে ওঠে। এই পাঁচ নেতার পক্ষে নেতাকর্মীরা পথসভাগুলোতে বক্তব্য রাখেন এবং সাধারণ মানুষের কাছে তাদের দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। তারা হুঁশিয়ারি দেন, দাবি মানা না হলে আন্দোলন আরও জোরদার হবে।
শোডাউনের শুরুতে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এম এইচ খান মঞ্জু বলেন, "আমরা দীর্ঘদিন ধরে দলের জন্য কাজ করছি। যে কারনে বিগত সরকারের আমলে বারবার হামলা-মামলা, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছি। ডাঃ বাবরের মনোনয়ন স্থানীয় নেতাকর্মীদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশে না থাকার কারণে এই ভুল সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই আসনটি পুনরুদ্ধারের জন্য যার জনসমর্থন, ত্যাগ ও সাংগঠনিক দক্ষতা বেশি, তাকেই মনোনয়ন দেওয়া উচিত। আমাদের আবেদন বিবেচনা করে দলীয় হাইকমান্ড সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আমি আশা করছি।"
তিনি আরও বলেন, এই শোডাউন কোনো ব্যক্তি বিশেষের বিরুদ্ধে নয়, বরং দলের বৃহত্তর স্বার্থে এবং আসনটি নিশ্চিতভাবে জয়ের লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
দলীয় নেতাদের এই বিভেদ শেষ পর্যন্ত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোপালগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির নির্বাচনী ফলাফলে কী প্রভাব ফেলে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...