বিজ্ঞাপন
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয়রা এসব অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। তারা দাবি করছেন—গত ১৪ বছরে সরকারি-বেসরকারি অনুদান, স্কেল পরিবর্তন ও উন্নয়ন খাতে পাওয়া অর্থের কোনো হিসাব নেই।
অভিযোগকারীরা জানান, অধ্যক্ষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদ্রাসাটিকে ব্যক্তিগত সম্পত্তির মতো পরিচালনা করছেন। ঘুষ ছাড়া পদোন্নতি পাওয়া যায় না; এমনকি বেতন বিল থেকেও প্রতি মাসে প্রায় ৫ শতাংশ করে কেটে নেওয়া হয়। এনএসই সই জালিয়াতি, চেক বই ও সাদা কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেওয়া এবং ব্যাংকে জমা না রেখে প্রতিষ্ঠানের অর্থ ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার—এসব গুরুতর অভিযোগও তার বিরুদ্ধে তুলেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আবদুল মতিন অভিযোগগুলোর বেশিরভাগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আনা প্রায় সব অভিযোগই সত্য। বারবার সতর্ক করেও কোনো পরিবর্তন হয়নি। হিসাব-নিকাশ নিয়ে কিছু বললেই হুমকি দেওয়া হয়।”
ইবতেদায়ী বিভাগের প্রধান মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ বলেন, “গত ১৪ বছরে প্রায় ৭৮ লাখ টাকার হিসাব পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করায় আমাকে শোকজসহ চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।”
অভিভাবক সদস্য সোহেল মিয়া জানান, অধ্যক্ষ নিয়মিত প্রতিষ্ঠানটিতে উপস্থিত থাকেন না। শিক্ষা পরিস্থিতিও চরম অবনতির দিকে। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে আলিম পরীক্ষায় সাতজন পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও সবাই অকৃতকার্য হয়েছে।
অভিভাবকদের ভাষ্য— শিক্ষক নিয়োগে স্বজনপ্রীতি, দায়িত্বহীনতা ও অদক্ষতার কারণে ফলাফল প্রতিনিয়ত খারাপ হচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।
তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত অধ্যক্ষ আবুল ফারাহ মো. আলী আকবর। তিনি দাবি করেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এটি একটি ষড়যন্ত্র।”
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, “আলিম পরীক্ষায় শতভাগ ফেল করায় ইতোমধ্যে অধ্যক্ষকে শোকজ করা হয়েছে। নতুন অভিযোগগুলোও তদন্তাধীন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বহুমুখী অভিযোগ, অডিটহীনতা এবং শিক্ষা ব্যবস্থার চরম অব্যবস্থাপনায় দেউলি মোহাম্মদিয়া আলিম মাদ্রাসা আজ বিতর্কের কেন্দ্রে। স্থানীয়দের দাবি—দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাব্যবস্থা আরও ভয়াবহ সংকটে পড়বে।
প্রতিবেদক- মোঃ জাহিদুল ইসলাম, বরিশাল।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...