Logo Logo

রাজাপুরে আঙ্গারিয়া আলিম মাদ্রাসার গভর্নিং বডি গঠনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ


Splash Image

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার আঙ্গারিয়া আলিম মাদ্রাসার গভর্নিং বডি গঠনকে কেন্দ্র করে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মো. আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আলহাজ ফরিদুজ্জামান তালুকদার এ বিষয়ে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।


বিজ্ঞাপন


অভিযোগপত্রে বলা হয়, স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অধ্যক্ষ গোপনে একটি ‘পকেট কমিটি’ গঠন করে বোর্ডে পাঠান। অভিযোগকারী দাবি করেন, ভূয়া অভিভাবক দেখিয়ে ভোটার তালিকা তৈরি করা হয়েছে এবং একক প্রার্থী দেখানোর সুবিধার্থে প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীর স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। ভোটার তালিকা দেখতে চাইলে অধ্যক্ষ তা দেখাতে অস্বীকৃতি জানান, যা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রতি মাসে ৬ লাখ ২০ হাজার ২৯২ টাকা উত্তোলনসহ বিভিন্ন আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে অধ্যক্ষ আফজাল হোসেন জড়িত। মাদ্রাসার কয়েকজন সহকারী শিক্ষক অভিযোগ করেন, তাঁদের বেতন থেকে নিয়মিতভাবে ১০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত টাকা কেটে নেওয়া হয়। এমনকি ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল খালি স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষরও নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে—অধ্যক্ষ নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন গ্রহণ করেন।

মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে দেখা যায়, জাতীয় পতাকা ছেঁড়া অবস্থায় টানানো রয়েছে। এ দৃশ্য দেখে স্থানীয় অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যেখানে জাতীয় পতাকাই সম্মান পায় না, সেখানে প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ও সুশাসন আশা করা যায় কীভাবে?”

অভিযোগ তদন্তে গত ২ ডিসেম্বর মাদ্রাসায় যান উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা সঞ্জীব মজুমদার। তবে দুই পক্ষের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে তিনি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত সম্পন্ন করতে না পেরে আংশিক প্রতিবেদন নিয়ে ফিরে আসেন।

তিনি জানান, নিবিড় পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে দ্রুতই পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হবে।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে অব্যবস্থাপনা, বেতন কর্তন, দুর্নীতি ও প্রশাসনিক সংকটের কারণে মাদ্রাসাটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমতে কমতে প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি তার সুনাম হারাচ্ছে।

অভিযোগ বিষয়ে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আলহাজ ফরিদুজ্জামান তালুকদার বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে অধ্যক্ষ আফজাল হোসেন মাদ্রাসাটি নিজের ইচ্ছামতো পরিচালনা করছেন। অনিয়ম-দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এর সুষ্ঠু তদন্ত ও ব্যবস্থা প্রয়োজন।”

অন্যদিকে অধ্যক্ষ মো. আফজাল হোসেন সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য দিতে রাজি হননি। তিনি শুধু বলেন, “আপনারা যা ইচ্ছে লিখেন। চাকরি গেলে যাক, আমি কিছু বলবো না।”

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে তদন্ত ও সুপারিশ চাওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে গভর্নিং বডি পুনর্গঠনসহ দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...