Logo Logo

পদত্যাগ করছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ


Splash Image

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের দুই ছাত্র প্রতিনিধি—তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ—আজ বুধবার পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র ভোরের বাণীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে কেউ নাম প্রকাশ করে মন্তব্য করতে রাজি হননি।


বিজ্ঞাপন


সরকার–সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজ বুধবার সন্ধ্যায় অথবা আগামীকাল বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তার আগেই দুই ছাত্র প্রতিনিধির পদত্যাগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার তারা সরকারের সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করেছেন।

এদিকে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ আজ বেলা তিনটায় সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. সালাউদ্দিন পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, তিনি সমসাময়িক ইস্যুতে বক্তব্য রাখবেন। তবে আসিফ মাহমুদের ঘনিষ্ঠরা বলছেন, পদত্যাগ সম্পর্কেই সংবাদ সম্মেলনে জানানো হতে পারে।

গতকাল মঙ্গলবার যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে জ্যেষ্ঠ কয়েকজন উপদেষ্টার বৈঠকেও বিষয়টি উঠে আসে। প্রতি মঙ্গলবার মধ্যাহ্নভোজের পাশাপাশি নিয়মিত বৈঠকের অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ নিয়ে আলোচনা হয়। সন্ধ্যায় সরকারের দায়িত্বশীল মহলে নিশ্চিত হওয়া যায়, তারা বুধবারই পদত্যাগ করছেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের অভ্যন্তরীণ আলোচনায় উপদেষ্টা পরিষদের বেশিরভাগ ব্যক্তিই একমত যে তফসিল ঘোষণার পর ছাত্র প্রতিনিধি দুই উপদেষ্টার পদে থাকা শোভন হবে না। তারা নির্বাচন করুন বা না করুন—উপদেষ্টা পদ ছাড়তেই হবে। সরকারের অবস্থান বুঝে তফসিল ঘোষণার ঠিক আগে আগে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন মাহফুজ ও আসিফ।

মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোনে পাওয়া যায়নি। খুদে বার্তাও অউত্তরিত থেকেছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে তিনজন উপদেষ্টা পরিষদে স্থান পান। পরে নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গঠন করলে মাহফুজ ও আসিফ উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন।

এনসিপিতে সরাসরি কোনো পদ না থাকলেও দলটিতে মাহফুজ ও আসিফের প্রভাব রয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে নতুন রাজনৈতিক জোট গঠন এবং বিভিন্ন আসনে প্রার্থী মনোনয়নের প্রক্রিয়া তাদের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা বাড়িয়েছে।

আসিফ মাহমুদ ইতোমধ্যে ঢাকা-১০ আসনকে ভোটের ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করছেন। তিনি গত ৯ নভেম্বর ভোটার এলাকা পরিবর্তন করে ধানমন্ডিতে নাম অন্তর্ভুক্তির আবেদন করেন। ফলে ঢাকা-১০ আসন থেকে স্বতন্ত্র অথবা কোনো রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আলোচনা ছড়িয়েছে। যদিও বিএনপি ইতোমধ্যে ওই আসনে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছে।

অন্যদিকে মাহফুজ আলমের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর-১ আসনে। এ আসনে বিএনপি দীর্ঘদিন প্রার্থী ঘোষণা না করলেও গত সোমবার এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বিএনপিতে যোগ দিলে দলটি তাকে ওই আসনে মনোনয়ন দেওয়ার কথা জানায়। এতে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা করে মাহফুজ আলমের নির্বাচনের সম্ভাবনা কমে গেছে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো নতুন সমীকরণে জোট গঠন শুরু করেছে। এর মধ্যে গত রোববার এনসিপি, এবি পার্টি এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন মিলে একটি নতুন জোট ঘোষণা করেছে। এনসিপিও বিভিন্ন আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করছে। মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ দলটির মনোনয়ন নেবেন কি না—তা এখন অনেকের নজর কাড়ছে।

সব মিলিয়ে, তফসিল ঘোষণার ঠিক আগে আগে দুই ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টার পদত্যাগ দেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই পদক্ষেপ তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন পথে মোড় নেবে—এ নিয়েও জল্পনা শেষ হচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...