ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে বরিশালের নলছিটি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি দায়িত্বশীল সূত্র।
এই জোড়া হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই প্রায় ২০ বছর বয়সী গৃহকর্মী আয়েশাকে প্রধান সন্দেহভাজন হিসাবে শনাক্ত করেছিল তদন্তসংশ্লিষ্টরা। পরিচয় যাচাই ও অবস্থান নিশ্চিত করতে বেশ বেগ পেতে হয় পুলিশকে। কারণ, বাসায় কাজ নেওয়ার সময় সে নিজের প্রকৃত নাম–ঠিকানা গোপন করেছিল। এছাড়া কাজে যোগদানকালে তার কাছে কোনো মোবাইল ফোন না থাকায় তার গতিবিধি ট্র্যাক করাও কঠিন হয়ে পড়ে। পরে যে ফোনটি সে বাসা থেকে নিয়ে বের হয়, সেটিও বের হতেই বন্ধ করে দেয়। আশপাশের অধিকাংশ সিসিটিভি ক্যামেরা অচল থাকায় তাকে শনাক্ত করতে পুলিশের বিভিন্ন ম্যানুয়াল পদ্ধতির ওপর নির্ভর করতে হয়েছে।
গত সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে শাহজাহান রোডের ১৪ তলা ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) ও তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিয়াকে (১৫) ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। নিহত লায়লার স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম সেদিন রাতেই মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, ওই দিন সকাল ৭টার দিকে আজিজুল ইসলাম মেয়েকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বাসায় ফোন করেন। স্ত্রী ফোন না ধরায় তিনি দ্রুত বাড়ি ফিরে এসে ঘরে দুইজনের মরদেহ দেখতে পান। এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়—বাসা থেকে একটি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা ও বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া গেছে।
ভবনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, আয়েশা সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বাসায় প্রবেশ করেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস পরে কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যান। মাত্র চার দিন আগে আয়েশা পরিচয় দিয়ে গৃহকর্মীর কাজ নেওয়ায় তার ওপর সন্দেহ আরও গাঢ় হয়।
তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান জানান, গৃহকর্মীর ব্যবহৃত নাম ও ঠিকানা ভুয়া হওয়ায় তাকে শনাক্ত করার প্রক্রিয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তবে বিভিন্ন স্থিরচিত্র, ভিডিও এবং তথ্যসম্ভারে মিলিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রকৃত পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
সুরতহাল প্রতিবেদনে উঠে এসেছে হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা। লায়লা আফরোজের শরীরে প্রায় ৩০টি এবং নাফিসার দেহে ৪টি ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন বলেন, “হত্যার উদ্দেশ্য এখনো স্পষ্ট নয়। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদেই প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার সকালে মা–মেয়ের মরদেহ নাটোর পৌরসভার দক্ষিণ বড়গাছায় নিয়ে যাওয়া হয়। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।
পুলিশের ধারণা, আয়েশাকে জিজ্ঞাসাবাদেই বের হয়ে আসবে হত্যার প্রকৃত কারণ, উদ্দেশ্য এবং পেছনে কারও সম্পৃক্ততা আছে কি না।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...