বিজ্ঞাপন
ইস্পাহানি–প্রথম আলো আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টে আবারও শিরোপার স্বপ্ন দেখছে প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন দল গণ বিশ্ববিদ্যালয় (গবি)। দ্বিতীয় আসরে সেমিফাইনালে থেমে যাওয়ার পর চলতি আসরে এখনো দুর্দান্ত ছন্দে আছে দলটি। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই গতি, সমন্বয় ও দাপুটে ফুটবলে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে শিরোপা পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে এক ধাপ এগিয়ে গেছে দলটি।
নান্দনিক ও সুশৃঙ্খল ভঙ্গিমার ফুটবলে একের পর এক জয়ে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছে নতুন করে শিরোপার স্বপ্ন দেখছে দলটি। বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন করে শিরোপার স্বাদ দিতে কঠোর অনুশীলন করছে খেলোয়াড়রা। শিরোপা পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে বেশ আত্নবিশ্বাসী তারা। জানিয়েছেন নিজেদের সেরা খেলা উপহার দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে চ্যাম্পিয়ন তকমা লাগাতেই মাঠে নামবে।
গেলো দুই ম্যাচে টানা হ্যাট্রিক করে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা খেলোয়াড় রাফায়েল টুডু বলেন, 'মাঠে জয় নিশ্চিত করে ফাইনালই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। দলের সবাই দুর্দান্ত খেলছে যার কারণে আমরা সেমিফাইনালে আসতে পেরেছি। মাঠে সবার থেকে অনেক সাপোর্ট পেয়েছি সেই অনুপ্রেরণাতেই টানা হ্যাট্রিক করতে পেরেছি। সামনের ম্যাচে নিজের সেরাটা খেলার চেষ্টা করবো। দলের জন্য গোল করার লক্ষ্য থাকবে। সুযোগ পেলে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ারও চেষ্টা করবো।'
মাঠে আক্রমণভাগে খেলোয়াড়দের গতি, মিডফিল্ডে ঠাণ্ডা মাথায় নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণভাগে দৃঢ়তা এই তিন স্তম্ভই তাদের সাফল্যের ভিত্তি গড়ে দিয়েছে। দলের আরেক খেলোয়াড় হিরা ঘোষ বলেন, 'গণ বিশ্ববিদ্যালয় এবারের আসরে দুর্দান্ত ছন্দে আছে। আগের ম্যাচের ভুল শুধরে পূর্ণ শক্তি নিয়ে সেমিফাইনালে মাঠে নামবো, জয় নিয়েই ফিরতে চাই।'
এরআগে গত ২৮ নভেম্বর এবারের আসরে নিজেদের প্রথম খেলাতেই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালকে হারিয়ে দুর্দান্ত সূচনা করে গণ বিশ্ববিদ্যালয়। এই খেলায় টাইব্রেকারে ৪-৩ গোলে ঢাবিকে হারিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশন শুরু হয়।
দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলায় গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিপক্ষ ছিলো ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি। তাদের বিপক্ষে সামর্থ্যের প্রমাণ দেয় খেলোয়াড়রা।
এই খেলাতেই দল হিসেবে নিজেদের শক্তির প্রমাণ দেয় গণ বিশ্ববিদ্যালয়। গতিময় উইং প্লে ও মিডফিল্ডের চমৎকার সমন্বয়ে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপার দিকে অগ্রসর হতে থাকে দলটি। এই খেলায় হ্যাট্রিক গোল করেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরাফাত মিয়া।
গ্রুপ ফাইনালে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে ৬-১ গোলের বিশাল ব্যবধানে জয় তুলে নেয় গণ বিশ্ববিদ্যালয় যা ফুটবলে বিশ্ববিদ্যালয়টির শ্রেষ্ঠত্বের আরেকটি প্রমাণ। এদিন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে একাই ৩ গোল করে আরাফাত মিয়ার পর হ্যাট্রিক গোলের দেখা পান গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাফায়েল টুডু। রক্ষণভাগের দৃঢ়তা আর গতিময় আক্রমণে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি কোনোভাবেই ম্যাচে ফিরতে পারেনি। এই জয়ের মধ্য দিয়ে ঢাকা অঞ্চলের প্রথম দল হিসেবে শেষ আট নিশ্চিত করে টুর্নামেন্টের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন শক্তিশালী গণ বিশ্ববিদ্যালয়।
কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ ছিল গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোবিপ্রবি)। এই ম্যাচটি ছিল সত্যিকারের পরীক্ষা—আর সেই পরীক্ষায় উজ্জ্বল ফল নিয়েই মাঠ ছাড়ে গবি। ডান পাশের গতি, মিডফিল্ডের নিয়ন্ত্রণ, ধারাবাহিক কাউন্টার অ্যাটাকে ৪-১ গোলের জয় নিশ্চিত করে সেমিফাইনালের টিকিট তুলে নেয় দলটি। গোল উদযাপনে ফুটে ওঠে তাদের স্পষ্ট বার্তা—শিরোপা পুনরুদ্ধার। এই ম্যাচেও হ্যাট্রিক গোল করেন আগের ম্যাচে হ্যাট্রিক করা রাফায়েল টুডু।
আগামী শনিবার (১৩ নভেম্বর) জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখোমুখি হবে চিটাগাং ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ)। সেমিফাইনালের ম্যাচকে ঘিরে ছাত্র–শিক্ষকসহ পুরো ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইতিমধ্যেই নিজের বিশ্ববিদ্যালয়কে মাঠে অনুপ্রেরণা দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে সবাই। জাতীয় স্টেডিয়ামে গণ বিশ্ববিদ্যালয় কি আবারও ফুটবল ইতিহাসে নাম লেখাতে পারবে? চ্যাম্পিয়ন তকমা ফিরে পেতে ফুটবল উন্মাদনায় উৎসবের পরিবেশ বিরাজ করছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস জুড়ে।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...