Logo Logo

টুঙ্গিপাড়ায় গ্রামীন পানি সমিতির লোহার পাইপ বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ


Splash Image

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী ইউনিয়ন গ্রামীণ পানি সমিতির মালিকানাধীন পুরাতন লোহার পাইপ বিক্রিকে ঘিরে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, কোনো ধরনের খোলা নিলাম, টেন্ডার (দরপত্র), মাইকিং কিংবা গণবিজ্ঞাপন ছাড়াই পাইপগুলো মাত্র একজন ক্রেতার কাছে বিক্রি করা হয়েছে।


বিজ্ঞাপন


নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানি প্ল্যান্টের এক কর্মচারী জানান, পাইপগুলো পুরাতন হলেও এর সর্বনিম্ন বাজারমূল্য কমপক্ষে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা হওয়ার কথা। অথচ কত দামে ও কী প্রক্রিয়ায় পাইপ বিক্রি করা হয়েছে—তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সরকারি কোনো মালামাল নিলাম বা মাইকিং ছাড়া বিক্রি হওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা পানি সমিতির পক্ষ থেকে আমরা কোনো মাইকিং, খোলা নিলাম বা টেন্ডারের খবর জানতে পারিনি।

পাইপ বিক্রির বিষয়ে পানি সমিতির সভাপতি ও পাটগাতী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুবাষ বিশ্বাস বলেন, সকল সদস্যের স্বাক্ষরের মাধ্যমে রেজুলেশন করে ৬০ হাজার টাকায় পাইপ বিক্রি করা হয়েছে। তবে তিনি কত ইঞ্চি পাইপ বা মোট কতটি পাইপ বিক্রি হয়েছে—সে বিষয়ে জানেন না বলে জানান। তিনি দাবি করেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীকে জানিয়েই পাইপগুলো বিক্রি করা হয়েছে।

অন্যদিকে পানি সমিতির সদস্য সচিব ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহিদ মোল্লা ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, এভাবে পাইপ বিক্রি করে আমরা ভুল করেছি। এটি আইনগতভাবে সঠিক প্রক্রিয়ায় করা হয়নি।

পানি সমিতির বিল ক্লার্ক আমজাদ হোসেন দাবি করেন, বিজ্ঞাপন দিয়েই পাইপ বিক্রি করা হয়েছে। তবে তার কাছে রেজুলেশন ও বিজ্ঞাপনের পত্রিকার কপি দেখতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো দেখাতে তিনি বাধ্য নন এবং প্রয়োজনে সংবাদ প্রকাশ করতে বলেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পানির লাইনের সংযোগ দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

পাইপ বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে পানি সমিতির সদস্য নজরুল শেখ বলেন, তিনি কোনো রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেননি। তার মতে, পাইপ বিক্রিতে স্পষ্ট অনিয়ম হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ও গ্রামীণ পানি সমিতির উপদেষ্টা প্রদীপ বাবু জানান, রেজুলেশন করে পাইপ বিক্রি করা যায় এবং সংশ্লিষ্টরা তাকে জানিয়েই পাইপ বিক্রি করেছেন। তবে সকল সদস্য যদি রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর না করে থাকেন, তাহলে দায়ভার সমিতির ওপরই বর্তাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, সরকারি কোনো জিনিস বিক্রি করতে হলে অবশ্যই আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রি করতে হবে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর মাধ্যমে পাইপগুলো এনে টেন্ডারের মাধ্যমে বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা দ্রুত তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

প্রতিবেদক- কে এম সাইফুর রহমান, গোপালগঞ্জ।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...