Logo Logo

বিজয়ের ৩ দিন মুক্ত হয়েছিল গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী


Splash Image

১৯ ডিসেম্বর, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়া অয়্যারলেস স্টেশনের মিনি ক্যান্টনমেন্টের পতন ঘটে। ১৬ ডিসেম্বর সারাদেশে চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও, কৌশলগত কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই জনপদটি শত্রু মুক্ত করতে মুক্তিযোদ্ধাদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল আরও তিন দিন। ১৯ ডিসেম্বর সকালে এখানে ওড়ে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা।


বিজ্ঞাপন


ভৌগোলিক ও সামরিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল গোপালগঞ্জ-ফরিদপুর-নড়াইল জেলার সীমান্তে অবস্থিত এই ভাটিয়াপাড়া অঞ্চল। তৎকালীন সময়ে রেলওয়ে স্টেশন ও নদীবন্দর হওয়ায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মে মাসে এখানে শক্তিশালী একটি সামরিক ঘাঁটি (মিনি ক্যান্টনমেন্ট) স্থাপন করে। মুক্তিযুদ্ধকালীন কাশিয়ানী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এনায়েত হোসেন জানান, দীর্ঘ সাত মাস ৬৫ জন পাকিস্তানি সেনার একটি শক্তিশালী গ্রুপ এখান থেকে নিরীহ মানুষের ওপর গণহত্যা ও অমানুষিক নির্যাতন চালায়। শহীদদের রক্তে রঞ্জিত হতো পাশের মধুমতী নদী।

যুদ্ধের ইতিহাসে ৬ ডিসেম্বর এক ভয়াবহ রাত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এদিন পাকিস্তানি সেনারা গোপালগঞ্জ সদর সংলগ্ন ‘জয়বাংলা’ পুকুরপাড়ের মিনি ক্যান্টনমেন্ট থেকে পালিয়ে এসে ভাটিয়াপাড়া ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। এরপরই শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত অভিযান। ৬ নভেম্বর ও পরবর্তীতে ১৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া টানা তিন দিনের তুমুল লড়াইয়ে পর্যুদস্ত হয় পাকিস্তানি বাহিনী। মুক্তিযোদ্ধাদের ঘায়েল করতে পাকিস্তানি বাহিনী বিমান হামলা চালালেও অসীম সাহসী মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটেনি। এই যুদ্ধে মীর মহিউল হক মিন্টু ও এ কিউ এম জয়নুল আবেদীনসহ বেশ কয়েকজন বীর সন্তান শহীদ হন।

অবশেষে ১৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টার দিকে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে অবরুদ্ধ থাকা ৬৫ জন পাকিস্তানি সেনা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এই চূড়ান্ত যুদ্ধে ৬ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয় এবং শহীদ হন বীর মুক্তিযোদ্ধা মশিউর রহমান সিকদার, অনিল কুমার বিশ্বাস, মজিবর রহমান ও মোহাম্মদ হান্নান শেখ। বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর বীর মুক্তিযোদ্ধারা উল্লাসে ফেটে পড়েন এবং ভাটিয়াপাড়ার আকাশে ওড়ান বিজয়ের নিশান। সেই থেকে প্রতি বছর এই দিনটিকে পরম শ্রদ্ধার সাথে ‘কাশিয়ানী মুক্ত দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে স্থানীয়রা।

বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপন

আরো দেখুন


বিজ্ঞাপন

পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...