ছবি : সংগৃহীত।
বিজ্ঞাপন
সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এই সংঘাত আন্তর্জাতিক রূপ নিতে পারে বলেও শঙ্কা দেখা দিয়েছে, কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ও কূটনৈতিক সংশ্লিষ্টতা ধীরে ধীরে বেড়ে চলেছে।
এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই ইরান ও ইসরায়েল থেকে গণহারে দেশ ছাড়ছেন মার্কিন নাগরিকরা। শনিবার (২১ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, সংঘাত চরম আকার ধারণ করায় ইরান থেকে শত শত মার্কিন নাগরিক স্থলপথে পালিয়ে যাচ্ছেন। এই তথ্য উঠে এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক গোপন বার্তায়, যা বার্তাসংস্থা রয়টার্স হাতে পেয়েছে।
রয়টার্স জানায়, গোপন ওই বার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে, বেশিরভাগ মার্কিন নাগরিক নির্বিঘ্নে ইরান ছাড়তে পারলেও, অনেকেই বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও দীর্ঘ বিলম্বের সম্মুখীন হয়েছেন। একটি পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ইরান ত্যাগের সময় দুজন মার্কিন নাগরিককে আটক করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকায় নাগরিকদের উদ্ধার ও সহায়তা কার্যক্রম জটিল হয়ে পড়েছে বলে বার্তায় আরও উল্লেখ করা হয়।
এদিকে, ইসরায়েলের রাজধানী তেল আবিবে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকেও নিরাপত্তার কারণে অন্তত ৭৯ জন কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) এক অভ্যন্তরীণ স্মারকের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানায়।
সংঘাতের মধ্যে ইরানের কেন্দ্রীয় শহর ইসফাহানে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)-সম্পর্কিত সংবাদ সংস্থা ফারস নিউজ জানিয়েছে, সেখানে অবস্থিত ইরানের সবচেয়ে বড় পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র “ইসফাহান নিউক্লিয়ার টেকনোলজি সেন্টার”-এর আশপাশে হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ইসফাহান প্রদেশের ডেপুটি গভর্নরের বরাতে জানা যায়, ইসফাহান ছাড়াও লানজান, মোবারাকে ও শাহরেজা শহরে ইসরায়েলি হামলা হয়েছে। যদিও পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে, তবে এতে কোনও বিপজ্জনক গ্যাস বা বিকিরণ ছড়ায়নি এবং হতাহতেরও খবর পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গোলান হাইটস এলাকায় একটি ইরানি ড্রোন ইসরায়েলের আকাশসীমায় প্রবেশ করলে সেটিকে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। ড্রোনটি জনশূন্য এলাকায় পড়ে এবং এতে কেউ আহত হয়নি।
ইসরায়েল আরও দাবি করেছে, তারা ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) ড্রোন ইউনিটের দ্বিতীয় শীর্ষ কমান্ডার “আমিন পুর জদখি”কে হত্যা করেছে। সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী জানায়, এই কমান্ডার ইরানের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল থেকে শত শত ড্রোন ইসরায়েলের দিকে পাঠানোর নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
এর আগে ১৩ জুন, “তাহার ফুর” নামের এক ড্রোন কমান্ডারকে হত্যা করা হয়েছিল এবং তারপর থেকেই জদখি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন বলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করে।
ইরান ও ইসরায়েলের এই সংঘাত এখন শুধু আঞ্চলিক সীমায় সীমাবদ্ধ নেই। এতে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া এবং পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা পরিস্থিতিকে আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে এর পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ।
জনপ্রিয়
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সংবাদ লোড হচ্ছে...